সিউড়ি: গরুপাচারকাণ্ডে সমবায় ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ। এবার সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কের ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নিয়ে তদন্ত শুরু করল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কে প্রায় সাড়ে তিনশো ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। এই সমস্ত ভুয়ো অ্যাকাউন্টের নথি ও তথ্য চেয়েছে সিবিআই। আগেই এই সাড়ে তিনশো অ্যাকাউন্টের নথি বাজেয়াপ্ত করেছে তারা।
গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছে ED। আজ দিল্লির সদর দফতরে তলব করা হয়েছে তৃণমূল নেতার হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হাজিরা দেন মণীশ। এর আগে গতবছরের নভেম্বরে অনুব্রতর হিসাবরক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। অনুব্রতকে হেফাজতে চাওয়ার সময় আদালতে ইডি জানায়, তারা অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা, হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি-সহ ১২ জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। সেই সূত্রেই আজ মণীশ ও আগামীকাল সুকন্যাকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে। সূত্রের খবর, অনুব্রত, তাঁর স্ত্রী, কন্যা, আত্মীয়, ঘনিষ্ঠদের নামে বিপুল সম্পত্তি, একাধিক রাইস মিল, কোটি কোটি টাকার লেনদেন, সবকিছু নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গতকাল টানা ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর দিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করে ইডি। আজ দিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। ইডি সূত্রে দাবি, তদন্তে অসহযোগিতা এবং তথ্য গোপনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কাল অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গতকাল অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে তলব করেছিল ED। তার ঠিক আগে তদন্তে অসহযোগিতা এবং তথ্য গোপনের অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করা হয়। গরু পাচার মামলায়, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের পর, এবার তাঁর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। টানা ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর, এদিন মণীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করা হয়।
গরুপাচারকাণ্ডে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, ব্য়াঙ্কে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির কোটি কোটি টাকা। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস কী?
এগুলো কি গরু পাচারের টাকা? তারই তদন্তে এদিন, দিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁর হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায়, সমস্ত নথিপত্র নিয়ে দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজিরা দেন চাটার্ড অ্য়াকাউন্ট্য়ান্ট মণীশ।
ED সূত্রে দাবি, প্রথমে এক ঘণ্টা মণীশ কোঠারিকে একাকী, এরপর, অনুব্রত মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ED সূত্রে দাবি, এর আগে, জেরার মুখে অনুব্রত বারবার দাবি করেন, হিসেবপত্রের বিষয়ে যা কিছু দেখার, দেখতেন মণীশ। জিজ্ঞাসাবাদে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্য়া মণ্ডলও দাবি করেন, তাঁর এবং তাঁর বাবার সমস্ত হিসাব দেখেন মণীশ আঙ্কল।
ED-সূত্রে দাবি, এদিন মণীশ কোঠারির মুখোমুখি বসালে, অনুব্রত মণ্ডল বলেন
আমি রাজনীতি করি, আমি টাকা পয়সার লেনদেনের বিষয়ে কিছু জানি না। ও (মণীশ) আমাকে যেখানে টাকা দিতে বলত, আমি তাই করতাম। লেনদেনের বিষয়ে ওই সব জানত।
ED-সূত্রে দাবি, ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত অন্য এক ব্যক্তি অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক ছিলেন। ২০১৮ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর মণীশ কোঠারি অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক হিসাবে কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালের পর থেকেই ভুয়ো কোম্পানিগুলো খোলা হয়। সূত্রের দাবি, ভুয়ো কোম্পানির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, কিছু বলেননি মণীশ কোঠারি।
কোটি কোটি টাকা নগদে ব্যাঙ্কে জমার বিষয়েও জানতে চান ইডির অফিসাররা। সূত্রের দাবি, এই প্রশ্নেরও কোনও উত্তর দেননি মণীশ। তদন্তকারীদের দাবি, গরু পাচারের টাকা গেছে এরকম প্রভাবশালীদের হয়ে কাজ করতেন মণীশ। মোটা অঙ্কের টাকা গেছে মণীশ কোঠারির কাছেও। এই বিষয়ে তথ্য পেতেই, মণীশ কোটারিকে গ্রেফতার করে ED।