বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: আবাস যোজনার দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পূর্ব মেদিনীপুরে মহিষাদলে গেল কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল। এদিন মহিষাদলের বেতকুনড এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি যান কেন্দ্রের আধিকারিকরা। সঙ্গে ছিলেন ডিএম, মহিষাদলের বিডিও ও জয়েন্ট বিডিও। কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার একাধিক অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃতীয় দিনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গেলেন মহিষাদলের বেতকুন্ডু অঞ্চল এলাকায় । এলাকায় গিয়ে প্রথমে মহিষাদলের বিডিও যোগেশ চন্দ্র মন্ডল ও জয়েন্ট বিডিওর সাথে কথা বলে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রওনা দেন গ্রামের ভেতরে। সঙ্গে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক শ্বেতা আগরওয়াল।
উল্লেখ্য আবাসদুর্নীতি নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদসহ একাধিক জেলায়।
পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের কুমোরচক গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রীয় দলের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপি কর্মীরা। জড়ালেন বাগ্বিতণ্ডায়। তদন্তে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা দেখেন, দোতলা বাড়ির মালিকের নাম রয়েছে আবাস তালিকায়। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন পঞ্চায়েত সচিব। তিনি ঘুষ নিয়েছেন কি না, জানতে চান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।
মুর্শিদাবাদ: আবাস দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে মুর্শিদাবাদের নওদার মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙাপাড়ায় বিক্ষোভের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। আবাস তালিকায় দুর্নীতি ও স্বজন পোষণের অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা। কেন্দ্রীয় দলের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ চলে। পরে বিডিও-র কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করেন গ্রামবাসীরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ল আবাস দুর্নীতির তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। এদিন ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যান দুই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি। বেহাল রাস্তা, ১০০ দিনের কাজ ও ভাঙা বাড়ি নিয়ে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।
পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে উড়ালপুলের দাবিতে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। গলসির গলিগ্রাম গুসকরা মোড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় অবরোধ। অবরোধে আটকে পড়ে আবাস যোজনার তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মালদা: মালদায় আবাস যোজনার তালিকায় এবার সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম। এদিন কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের চরি-অনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া গ্রামে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। জানা যায়, আবাস তালিকায় নাম রয়েছে কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির সিভিক ভলান্টিয়ার অভিজিৎ পাণ্ডের। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের কাছে ছেলের নাম তালিকায় থাকার কথা স্বীকার নেন সিভিক ভলান্টিয়ারের মা। যদিও মালদার জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়ার দাবি, ডিসেম্বরেই সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম আবাস তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ঝাঁ চকচকে পেল্লায় বাড়ি। কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের চরি-অনন্তপুর গ্রামে রেশন ডিলার যদুনন্দন দাসেরও নাম রয়েছে আবাস তালিকায়। তবে তাঁর দাবি, আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার জন্য তিনি কোনও আবেদন করেননি। মালদার জেলাশাসক জানিয়েছেন বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন, এমন ১১ জনের নাম গত ডিসেম্বর মাসে বাতিল করা হয়েছে।