কলকাতা: চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড়ের মধ্যেই আর জি কর মেডিক্যালে ৯RG Kar News) আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ। তার তদন্তে SIT গঠন করল রাজ্য সরকার। প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের জমানায়, ২০২১ সাল থেকে, ব্যাপক কারচুপি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আর জি কর মেডিক্যালে। তার তদন্তে IG পদমর্যাদার অফিসার প্রণব কুমারের নেতৃত্বের ৪ সদস্যের সিট গঠন করল স্বরাষ্ট্র দফতর। এক মাসের মধ্যে SIT-কে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে প্রথমবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন সন্দীপ ঘোষ। ২০২৩ সালের ৩১ মে, তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক হিসেবে বদলি করে স্বাস্থ্যভবন। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়, উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে। কিন্তু, শোনা যায় সন্দীপ ঘোষ অধ্যক্ষের ঘরে তালা দিয়ে চলে যাওয়ায়, নতুন অধ্য়ক্ষ এসেও দায়িত্ব নিতে পারেননি। এরই মধ্যে নাটকীয়ভাবে সেদিন দুপুরেই স্বাস্থ্যভবন থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ বদল হচ্ছে না। ওই পদে থাকবেন সন্দীপ ঘোষই। এর মাস তিনেকের মধ্যে, গতবছর সেপ্টেম্বরে অধ্যক্ষ বদলি ঘিরে ফের চাপানউতোর তৈরি হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক পদে বদলি করা হয়। তাঁর জায়গায় অধ্যক্ষ পদে বসানো হয় বারাসাত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে। কিন্তু সেবারও মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁকে ফের আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে ফেরানো হয়।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া-চিকিৎসকই নন, চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশেরও মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে আইএমএ-র প্রতিনিধি সৌরভ দত্ত বলেছিলেন, "বিগত ৩ বছর ধরে, আরজি কর মেডিক্যল কলেজ খবরের শিরোনামে। কীসের কীসের জন্য? না, প্রিন্সিপ্যাল লাথি মেরে ধর্নারত স্টুডেন্টদের গায়ে লাথি মেরে বেরিয়ে গেছেন। তার জন্য। তার সঙ্গে, বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট নিয়ে দুর্নীতির কারণে, কখনও নিয়ম বহির্ভূতভাবে টেন্ডার করে লোকজনকে জায়গা দিয়ে স্টল পাইয়ে দেওয়ার জন্য, আর্থিক কেলেঙ্কারির জন্য, ছেলেমেয়েদের, ভিন্ডিক্টিভ হয়ে, যারা তাঁকে সমর্থন করে না, তাঁদেরকে ফেল করানোর জন্য, এবং তাঁর পোষা কিছু ছাত্র যারা কলেজে মাতব্বরি, দাদাগিরি করে পুরো কলেজটাকে একটা শ্মশানের মতো জায়গায় পরিণত করেছে।''
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি বলেন, "ওঁর বিরুদ্ধে অনেকগুলো দুর্নীতি ছিল। এছাড়া সবথেকে যেটা বাজে জিনিস ছিল, একটা মেডিক্য়াল কলেজে বায়ো মেডিক্য়াল বর্জ্য় ট্রাফিকিং, বেআইনি ট্রাফিকিং হত। ওনার সময় যেটা ছিল, ওনার টাকা তোলা, তোলাবাজিগুলো উনি করতেন। ২০% কমিশন খাওয়া... একাধিক ওনার সময়ে অভিযোগ ছিল। যেগুলো আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। ওনার সঙ্গে আমার একটা যুদ্ধ লেগেছিল। প্রায় আমাকে ৮-৯ মাস লড়তে হয়েছে। আমি ২ মাস বেতন ছাড়া ছিলাম। এখনও আমার বেতন রেগুলারাইজ হয়নি।''
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।