বোলপুর: বড় হয়েছেন শান্তিনিকেতনে। নাম রেখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অথচ সেই অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বিরুদ্ধেই জমি জবরদখলের অভিযোগ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের (Visva Bharati)। এমনকি অর্থনীতিবিদের নোবেল পাওয়া নিয়েও তোলা হয়েছে প্রশ্ন। এর নেপথ্যে রাজনীতিই রয়েছে বলে মনে করছেন অমর্ত্য। তিনি অসাম্প্রদায়িক মানুষ, তাই সাম্প্রদায়িক শক্তি তাঁকে বাড়িছাড়া করতে চাইছে বলে মন্তব্য করলেন।


বিতর্কের নেপথ্যে নেপথ্যে রাজনীতিই রয়েছে বলে মনে করছেন অমর্ত্য


পৈতৃক ভিটে ‘প্রতীচী’ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিশ্বভারতীর সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে অমর্ত্যর। বিশেষ করে বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বেনজির ভাবে তাঁকে আক্রমণ করায়, মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে বিষয়টি। কৃতী বঙ্গসন্তানকে এ ভাবে আক্রমণ করা, তাঁর নোবেলজয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা বাংলার সংস্কৃতির পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন খোন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে এ বার মুখ খুললেন খোদ অমর্ত্য।


বিশ্বভারতীর সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেই সোমবার বাড়িতে গিয়ে অমর্ত্যকে জমির কাগজপত্র দিয়ে আসেন মমতা। কিন্তু তাতেও হেনস্থা থেকে নিস্তার মিলবে না বলে মত অমর্ত্যর। এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বলেন, “কথায়, “যাঁরা এ নিয়ে বিচলিত, আমাকে বাড়িছাড়া করতে চান, তাঁদের উদ্দেশ্য তো বড়! তার মধ্যে কিছু রাজনীতি আছে, কিছু সমাজনীতি আছে। বাবার কেনা কিছু এবং লিজ নেওয়া  কিছু যে জমি রয়েছে, তাঁদের মতে আমার হয়ত প্রাপ্য নয় সেটা। নানা কারণে সেটা হতে পারে। রাজনীতি তো নিশ্চয়ই হতে পারে।”


আরও পড়ুন: Amartya Sen: ‘ওঁর উৎসাহ দেখে আশ্চর্য হলাম, ভাল লাগল’, মমতার থেকে জমির কাগজ পেয়ে বললেন অমর্ত্য


এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন করলে অমর্ত্য বলেন, “আমাদের মধ্যে তো এইটুকু পার্থক্য অনেক সময়ই থাকে! আমরা যেমন অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি পছন্দ করি, সেটা রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজিও করতেন। হিন্দু-মুসলিম পার্থক্য করি না আমরা। খানিকটা এখানে, খানিকটা ঢাকায় বড় হয়েছি। তখন হিন্দু-মুসলিম কাছাকাছি থাকতেন এবং সুহৃদ্যতা ছিল। যাঁরা প্রধানত রাজনীতি করেন, তাঁদের পক্ষে এটা খুব বাঞ্ছনীয় ব্যবস্থা নয়। তাই অনেকের বাধা দেওয়ার ইচ্ছা থাকতে পারে।”


এর আগে, অমর্ত্যর ‘ভারতরত্ন’ সম্মান পাওয়া নিয়েও খুঁচিয়ে তোলা হয়েছিল প্রশ্ন


এর আগে, অমর্ত্যর ‘ভারতরত্ন’ সম্মান পাওয়া নিয়েও খুঁচিয়ে তোলা হয়েছিল প্রশ্ন। বিশ্বভারতীর উপাচার্য এখন দাবি করছেন, অমর্ত্য নাকি নোবেলই পাননি! সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে এ সবে যায় আসে না বলে জানিয়ে দেন অমর্ত্য। তাঁর কথায়, “ভারতরত্ন হোক নোবেল পুরস্কার, এ সবের উপর কোনও লোভ নেই আমার। যে বিষয়ে যে, যা বলতে চান, মন খুলে বলতে পারেন। কোনও রকম আপত্তি নেই আমার।”