ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি চলছে। তবুও দুই দেশের মধ্যে চলছে তীব্র চাপানউতোর।  এই পরিস্থিতিতে সংঘর্ষ বিরতির ৬ দিনের মাথায় শান্তি চেয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার বার্তা দিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু এই মুহূর্তে আরও বড় দাবি করে বসল আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (DIA) ।  পাকিস্তানের অন্যতম মিত্র বলে পরিচিত চিন। DIA - এর দাবি, অত্যন্ত বিপজ্জনক অস্ত্র তৈরির চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বেজিং । ১৩ মে এই দাবি করে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা। 

দাবি, চিন আগামী ১০ বছরের মধ্যে মহাকাশ থেকে পারমাণবিক আক্রমণ করতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম Fractional Orbital Bombardment System (FOBS) তৈরি করছে চিন।  প্রযুক্তি শুধুমাত্র আমেরিকার জন্য নয়, ভারতের মতো মিত্র দেশগুলির জন্যও গুরুতর হুমকি হতে পারে। মত ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (DIA)-র। 

Fractional Orbital Bombardment System (FOBS) ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM) এর তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত কাজ করে । মহাকাশের নিম্ন কক্ষপথ থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। অর্থাৎ কোনও দেশই এগুলিকে সময়মতো ট্র্যাক বা ইন্টারসেপ্ট করতে পারবে না। FOBS প্রযুক্তি প্রথমে সোভিয়েত ইউনিয়ন উদ্ভাবন করেছিল, কিন্তু চিন হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকেল (HGV) এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এটিকে আরও বেশি ধ্বংসাত্মক করে তুলেছে।

বিশ্বব্যাপী আতঙ্কFOBS ক্ষেপণাস্ত্রে হাইপারসোনিক গতিতে চলা অস্ত্র থাকে, যা পৃথিবীর যে কোনও স্থানকে লক্ষ্য করতে পারে। চিন ২০২১ সালে লং মার্চ ২সি রকেটের সাহায্যে এই প্রযুক্তির পরীক্ষাও করেছিল, যা বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করে। হাইপারসোনিক গ্লাইড যান (HGV) শুধুমাত্র পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম তাই নয়, সাধারণ অস্ত্রেও সজ্জিত হতে পারে। এদের গতি এত বেশি যে আজকের সবচেয়ে উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমও এগুলিকে প্রতিহত করতে পারবে না। 

কেন আমেরিকা এবং ভারত উভয়কেই সতর্ক থাকা উচিত?আমেরিকার পেন্টাগনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তালিকা অনুসারে ২০৩৫ সালের মধ্যে চিনের কাছে ৬০টি FOBS ক্ষেপণাস্ত্র থাকতে পারে। ৭০০টি নিউক্লিয়ার ICBMs, ১৩২টি সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৪০০০টি হাইপারসোনিক গ্লাইড যান থাকবে। চিনের পর রাশিয়াও এই প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করার দিকে এগোচ্ছে। FOBS-এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হল এটি যে কোনও দিক থেকে আক্রমণ করতে পারে। আমেরিকার রাডার ব্যবস্থা মূলত উত্তর গোলার্ধে ফোকাস করে । কিন্তু  FOBS দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে আসতে পারে। 

চিন ও রাশিয়ার এই হাই-এন্ড সমর-ব্যবস্থার বিষয়টা মাথায় রেখেই ডোনাল্ড ট্রাম্প গোল্ডেন ডোম মিসাইল ডিফেন্সকে অনুমোদন দিয়েছে। এটি হবে বিশ্বের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এই প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ বিলিয়ন ডলার এবং মোট ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে ইলন মাস্কের কোম্পানি SpaceX সহ অনেক আমেরিকান প্রতিরক্ষা কোম্পানি কাজ করছে।