হাওড়া: হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ সুপারের অফিসে হামলার অভিযোগে ধৃত ১৬ জন এসএফআই (SFI) এবং ডিওয়াইএফআই (DYFI) কর্মীকে চারদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেন হাওড়া আদালতের বিচারক। ডিওয়াইএফআই(DYFI)-এর রাজ্য নেতৃত্ব মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়সহ (Minakshi Muj) ১৪ জনকে গতকাল হাওড়া আদালত একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। বাকি দু-জনকে একদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।


আজ ওই ১৬ জনকে হাওড়া আদালতের ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয়। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তাদের জামিনের জন্য আদালতের সওয়াল করেন। সরকারি আইনজীবী তাদের জামিনের বিরোধিতা করেছেন। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী মিহির বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন তাঁরা এই পুলিশ সুপারের অধীনে কোনও তদন্তে আস্থা রাখতে পারছেন না। প্রকৃত তদন্তের জন্য তারা সিবিআই অথবা সিআইডি তদন্তের দাবি করছেন। আগামী ৪ মার্চ অভিযুক্তদের ফের হাওড়া আদালতে তোলা হবে।


আরও পড়ুন: Anish Khan Case Update: অবশেষে ময়নাতদন্ত ঘিরে কাটল জটিলতা, পরিবারের দাবি মেনেই প্রক্রিয়া


উল্লেখ্য, ছাত্রনেতা আনিস খানকে খুনের প্রতিবাদে শনিবারও উত্তাল ছিল রাজ্য। হাওড়ার পাঁচলায় SFI-DYFI-এর কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের গ্রেফতারির প্রতিবাদে উত্তেজনা ছড়ালয় কলকাতার রাজপথে। আনিস খুনে দোষীদের গ্রেফতারির দাবিতে বাম ছাত্র সংগঠনের এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘিরে হাওড়ার পাঁচলায় তুলকালাম চলে। এসপি অফিস লক্ষ্য করে ইট, লাঠি বাম ছাত্র সংগঠনের। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাল পুলিশ, করা হয় লাঠিচার্জ। সংঘর্ষে আহত ৮ জন পুলিশকর্মী। গ্রেফতার করা হয় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ ১৭ জন বিক্ষোভকারীকে। 


ছাত্র নেতা আনিস খান হত্যাকাণ্ডে রণক্ষেত্র হাওড়ার পাঁচলা। পুলিশ - বিক্ষোভকারী খণ্ডযুদ্ধ। ইটবৃষ্টি...লাঠিচার্জ...টিয়ার গ্যাস - কিচ্ছু বাদ গেল না!
সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকে হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘিরে যেন যুদ্ধ বাধে এদিন।


হাওড়ার রানিহাটি থেকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে এগোতে শুরু করে SFI-DYFI’এর মিছিল। রানিহাটি-আমতা রোডে, SP অফিসের ৭০০ মিটার দূরেই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। 


বিকেল ৪টে ৫-এ এসপি অফিস থেকে ১০০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে পড়ে মিছিল। একদিকে বিশাল পুলিশবাহিনী। অন্যদিকে, এসএফআই-ডিওয়াইএফআই কর্মী সমর্থকদের ভিড়! গার্ডরেল ভেঙে পুলিশ সুপারের অফিসের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বাম-কর্মী সমর্থকরা। পুলিশ বাধা দিতেই বেধে যায় ধুন্ধুমার! একের পর প্রিজন ভ্যানে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। 



শুরু হয় ইটবৃষ্টি। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইট লাগে পুলিশের হেলমেটে। রক্তাক্ত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী বিক্ষোভ হঠাতে পাল্টা টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ! শুরু হয় ধরপাকড়। বিকেল ৪টে ৩৮-এ হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সৌম্য রায়ের নেতৃত্বে অফিস থেকে বেরিয়ে আসে বিশাল বাহিনী। পথে নামেন এডিজি সাউথ বেঙ্গল সিদ্ধিনাথ গুপ্ত। শুরু হয় ধরপাকড়।