সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : 'ববিতা নন, চাকরির প্রকৃত দাবিদার অনামিকা', দাবি জানিয়ে আদালতে দায়ের হল মামলা । মঙ্গলবারই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামীকাল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। 


৮০০ র মধ্যে ৪৪০ পেয়েছেন ববিতা


অনামিকার ( Siliguri resident Anamika Ray )দাবি, 'ফর্ম পূরণের সময় ববিতা (Babita Sarkar) লিখেছিলেন তিনি স্নাতক স্তরে  ৮০০ র মধ্যে ৪৪০ পেয়েছেন,  ববিতা জানিয়েছিলেন, তিনি শতাংশের হিসাবে ৬০ শতাংশ পেয়েছেন '। যদিও দেখা যাচ্ছে যে শতাংশের হিসাবে এটি ৬০ শতাংশের কম  অনামিকার দাবি, হিসাব অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রের ববিতার প্রাপ্য নম্বর ৩৩ এর পরিবর্তে ৩১ হওয়া উচিত তাঁর মোট নম্বরও ৭৭ এর পরিবর্তে ৭৫ হওয়া উচিত, দাবি তাঁর। 


ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ববিতাও 



সোমবারই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ববিতা সরকার জানিয়েছিলেন যে তাঁকে ২ নম্বর বাড়তি দেওয়া হয়েছে। ববিতাকে সোমবার নতুন আবেদনপত্র দাখিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 


অঙ্কিতার পাওয়া বেতনের পুরোটাই পেয়েছেন মামলাকারী ববিতা


সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেরিট লিস্ট। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ববিতা সরকারের টোটাল মার্কস ৭৭। যার মধ্য়ে অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩। কিন্তু, সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই আবেদনের ফর্মে দেখা যাচ্ছে, স্নাতক স্তরে, ৮০০-র মধ্য়ে ৪৪০ নম্বর পেয়েছেন তিনি। অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ। কিন্তু, ফর্মে লেখা তিনি ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন। আর তার ভিত্তিতেই ববিতাকে অ্য়াকাডেমিক স্কোরে ২ নম্বর বেশি দিয়েছে কমিশন। ববিতার অ্য়াকাডেমিক স্কোর যেখানে ৩১ হওয়ার কথা, সেখানে তিনি পেয়েছেন ৩৩।

সম্প্রতি, হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিপ্রার্থীদের নম্বরের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
আর তারপরই, প্রকাশ্যে চলে এসেছে নম্বর-বিভ্রাট। অ্য়াকাডেমিক স্কোরে ২ নম্বর বেশি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ববিতাও। তিনি বলেন, 'আমি এতদিন বুঝতে পারিনি কমিশন ২ নম্বর বেশি দিয়েছে ভুল করে। আপনারা জানেন আমরা নম্বরই জানতাম না। rank এর লিস্ট দেওয়া হয়েছিল' 

২ নম্বর কমে গেলে তো তাঁর চাকরিও চলে যেতে পারে?


বর্তমানে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছেন ববিতা। হাইকোর্টের নির্দেশে, প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর ৪৩ মাসের উপার্জিত বেতন, প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা পান ববিতা। কিন্তু এই নম্বর-বিভ্রাট প্রকাশ্য়ে চলে আসায়, ববিতার নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।


তাঁকে এই প্রশ্ন করা হয়, ২ নম্বর কমে গেলে তো তাঁর চাকরিও চলে যেতে পারে। তখন তিনি বলেন , নিশ্চয়ই, তবে তাঁর লড়াই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। 

মেধাতালিকায় ববিতার পরই নাম ছিল, শিলিগুড়ির বাসিন্দা, অনামিকা রায়ের। নম্বর বিভ্রাটে ববিতার নাম যদি মেধাতালিকায় পিছনে চলে যায়, তাহলে তাঁর চাকরির পরবর্তী দাবিদার অনামিকাই। নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্য়ে এই ঘটনায় ফের বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভূমিকা।