কলকাতা: রাজ্যে গত কয়েকমাসে একাধিক খুনের ঘটনা (Murder Case) প্রকাশ্যে এসেছে। রাজনৈতিক ইস্যুগুলি বাদ দিলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুনের ঘটনার পিছনে রয়েছে কোনও না কোনও পারিবারিক ইস্যু। 'বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক'-র (Extra Marrital Affairs) জেরে খুনের ঘটনা নতুন নয়। এখনও অতীতে ফিরে দেখলে বসিরহাট-নদিয়া-সহ একাধিক বিভীষিকাময় উদাহরণ উঠে আসবে। তবে হ্যাঁ বিরিয়ানি খাইয়ে নাবালিকা খুন ও ধর্ষণের ঘটনার সাক্ষীও এরাজ্যই। তবে এবার মাদক মিশিয়ে জামাইকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে (Murder Case)। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার আনন্দপুর এলাকায়। 


আনন্দপুরে জামাইকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে (Murder Case)। বাড়িতে ফিরে অসুস্থ বোধ করলে,হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। মৃত্যু হয়েছে, তিলজলার বাসিন্দা বছর ৪৪-এর আলম হুসেনের। এই ঘটনায় স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি-সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Police)। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আলমের স্ত্রী, এ নিয়ে ২ জনের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। মৃতের পরিবারের দাবি, শনিবার সন্তানকে দেখতে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন আলম। অভিযোগ, তাঁকে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে পিটিয়ে মারা হয়। ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে আনন্দপুর থানার পুলিশ (Anandapur Police Station)। 


 মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আলমের স্ত্রী। তাই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। বাপের বাড়িতেই থাকছিলেন আলমের স্ত্রী। মৃতের পরিবারের দাবি, রবিবার সন্তানকে দেখতে শ্বশুরবাড়িতে আসেন আলম। অভিযোগ, তাঁকে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরের পর রিকশায় তুলে দেওয়া হয় আলমকে। মৃতের বোন রুকসানা খাতুন বলেছেন, 'আমার ভাইকে মদ খাইয়ে মেরেছে। স্ত্রীর সঙ্গে গণ্ডগোল। অন্য লোকের সঙ্গে সম্পর্ক। ডিভোর্সও দিচ্ছিল না। মদ খাইয়ে মেরে দিয়েছে। 'এই ঘটনায় মৃতের স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক-শ্যালিকা মিলিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় রুজু হয়েছে মামলা। 


গত কয়েকমাসে একাধিক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে আনন্দপুরে। আনন্দপুরে একটি আবাসনে এক বৃদ্ধ দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়। এই আনন্দপুরেই ৫ কোটি টাকা হাতাতে গণধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ ওঠে। নাতনিকে বিক্রির অভিযোগে দাদু ও সৎ দিদিমা-সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এবার, শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে জামাইকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ফের শিরোনামে এল আনন্দপুর। 


রাজ্যে এর আগে একাধিকবার খুনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। তবে জামাই খুনের অভিযোগ সেই তুলনায় কম প্রকাশ্যে আসে। তবে যেকোনও কারণেই হোক না কেন, এই ধরণের ঘটনা গুরুতর অপরাধ। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে, শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। টাকা ও গয়নার দাবি মেটাতে না পারায় মেয়ের এই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে দাবি পরিবারের। অভিযুক্ত শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মৃতার স্বামী ও শাশুড়ি পলাতক।


আরও পড়ুন, সল্টলেকের অরণ্য ভবনে জ্যোতিপ্রিয়র অফিসে এবার ED-র হানা


দেবীপক্ষে শহরে আরও একটি নৃশংস ঘটনা সামনে এসেছিল। খুন গৃহবধূ (House Wife Murder)। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল স্কুল শিক্ষক স্বামী। খুনের পর, বাড়িতেই দেহ পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের দাবি ছিল, প্রথমে জানানো হয়েছিল, বাড়িতে আগুন লেগেছে। ঘটনাস্থলে গেলে জানানো হয়েছিল, গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছিলেন। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত তথ্য সামনে এসেছিল। জানা গিয়েছিল, ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে খুন করার পর, দেহে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয়ার সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটেছিল বউবাজারের (Bowbazar) যদুনাথ দে রোডে।