অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: ট্রেনে করে বেড়াতে গিয়ে, মাঝপথে হারিয়ে গেছিলেন। বিজয়ওয়াড়া (Bijaywara) থেকে এসে পৌঁছেছিলেন কলকাতায়। দুর্ঘটনায় জখম হওয়ায়, হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল পুলিশ। শেষমেশ হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে মিলেছে পরিবারের খোঁজ। ৩ মাস পর নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhrapradesh) বৃদ্ধা।
একে অন্যের ভাষা বোঝেন না, তাই সেভাবে কথাও হয়নি। কিন্তু, বৃদ্ধার হাসিই বুঝিয়ে দিচ্ছে, কথা না হলেও, তাঁর সঙ্গে নার্স-চিকিৎসকদের মনের কোনও দূরত্ব নেই। আসলে এই হাসি যে একরকম মুক্তির হাসি! হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে ৩ মাস পর খোঁজ মিলেছে পরিবারের। কলকাতা থেকে নিজের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে ফিরে গেলেন সিথালু কোট্টাক্কি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে, পরিবারের সঙ্গে ট্রেনে করে কাশীতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন ষাটোর্ধ্ব এই মহিলা। পরিবারের দাবি, বিজয়ওয়াড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু, ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় আর উঠতে পারেননি। এরপর বৃদ্ধার সঙ্গে পরিজনদের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি, কলকাতার রেড রোডে (Kolkata Red Road) জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বৃদ্ধাকে। পুলিশ তাঁকে SSKM-এর ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করে। হাড় ভেঙে যাওয়ায় অস্ত্রোপচারও হয় তাঁর। এরপর তাঁকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়।
একদিকে মহিলার পরিবারের হদিশ নেই, অন্যদিকে ভাষার সমস্যা। তেলগু ছাড়া কোনও ভাষায় বৃদ্ধা কথা বলতে না পারায়, সমস্যায় পড়তে হয় তাঁকে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এরপরই রোগীর পরিবারের সন্ধান পেতে, হ্যাম রেডিও (Ham Radio) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় হাসপাতালের তরফে।
অন্যদিকে, ঠিক একইভাবে অন্ধ্রেও বৃদ্ধার খোঁজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল তাঁর পরিবার। এরপর হ্যাম রেডিওর মাধ্যমেই হদিশ মেলে সিথালু কোট্টাক্কির বাড়ির। জানা যায়,তাঁর বাড়ি কলকাতা থেকে ৮৩২ কিলোমিটার দূরে অন্ধ্রের বিজয়নগরে।
ঠাকুমার খোঁজ পেতেই কলকাতায় চলে আসেন নাতি। সোমবার রাতের ট্রেনেই ঠাকুমাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন নাতি। কিন্তু, জীবনের এই ৩টে মাস হয়ত কোনও দিন ভুলবেন না বৃদ্ধা। তাঁকে মনে রাখবেন SSKM-এর নার্স-চিকিৎসকরাও।
আরও পড়ুন: Vaishno Devi Accident : বৈষ্ণোদেবী যাওয়ার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, খাদে বাস পড়ে মৃত ১০