সৌভিক মজুমদার, কলকাতা; সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করছে CBI? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে জানতে চাইলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অন্য়দিকে, পৃথক একটি এজলাসে, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই-এর উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিল, দুই বিচারপতির বেঞ্চ। সব কাজ তো সিঙ্গল বেঞ্চ করছে, আপনারা কী করছেন? মন্তব্য় বিচারপতির। 



দুই মামলারই বিষয়বস্তু নিয়োগ দুর্নীতি। দুটোই SSC’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য সংক্রান্ত। আর দুই মামলাতেই CBI'এর উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন বিচারপতিরা। বুধবার, CBI-এর উদ্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করছে তারা? উত্তরে, CBI জানায়, নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হেফাজতে রয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য।

এবার গ্রুপ-C মামলাতেও প্রডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেছে নিম্ন আদালত। ২২শে ডিসেম্বর, অর্থাৎ আগামী বৃহস্পতিবার এর শুনানি। সেদিন তাঁকে নিম্ন আদালতে পেশ করবে জেল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, জেল থেকে আদালতের দুরত্ব ২ কিলোমিটারেরও কম। তাহলে এত সময় লাগবে কেন? সুবীরেশকে কি তিহার জেল থেকে আনা হবে? সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি।

তিনি বলেন, চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসে আছেন, আর একজন অভিযুক্তকে পেশ করতে ১০ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে! সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারককে জানাবেন, তাঁর ভূমিকায় আমি খুশি নই। মঙ্গলবারের মধ্যে, বিচারকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। পাশাপাশি, নিম্ন আদালতে, দ্রুত শুনানির জন্য CBI-কে আবেদন করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।

অন্যদিকে, এদিনই, SSC’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলায়, CBI-এর উদ্দেশ্য়ে কড়া মন্তব্য করেছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ।তাঁরা বলেন
সব কাজ তো সিঙ্গল বেঞ্চ করছে, আপনারা কী করছেন?

এদিন, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন জানিয়ে, তাঁর আইনজীবী সওয়াল করে বলেন, ৮৮ দিন ধরে জেলে রয়েছেন সুবীরেশ। ৫ বার সিবিআইয়ের সামনে হাজিরা দিয়েছেন। FIR এ তাঁর নাম ছিল না। তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করেছেন।
চার্জশিট দাখিল হয়ে গেছে। তখন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ ৭ বছর। তদন্তে দেরি হচ্ছে এই অভিযোগ থাকলে সাড়ে ৩ বছর পরে আসুন। এরপরই, মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, আদালতের নির্দেশে এবং পর্যবেক্ষণে CBI তদন্ত করছে।

তখন, CBI-এর কাছে বিচারপতিরা জানতে চান, তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে? শেষ হতে কতদিন লাগতে পারে? দুর্নীতিতে কী ভূমিকা রয়েছে সুবীরেশ ভট্টাচার্যর? তাঁকে আর হেফাজতে রাখার প্রয়োজন আছে কি? তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা কি বিচারাধীন আছে? দুর্নীতি-তদন্তে CBI-কে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় আদালত। ২১ ডিসেম্বর, অর্থাৎ বুধবারের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। যদিও সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন নিয়ে এদিন কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত।