কলকাতা: আনিস খানের (Anis Khan) মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। পড়ুয়া আনিসের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ তুলেছিল তার পরিবার। ওই মৃত্যুর তদন্তে রাজ্যের তরফে সিটও গঠন করা হয়েছিল। সেই ঘটনার ১৪৪ দিন পরে সোমবার উলুবেড়িয়া আদালতে চার্জশিট (Charge sheet) জমা দিয়েছে রাজ্য পুলিশের তৈরি করা সিট। সেখানে নাম রয়েছে আমতা থানার তৎকালীন ওসি-সহ পাঁচজনের। ওই চার্জশিটে খুনের অভিযোগ নাকচ করে গাফিলতির জেরে মৃত্যুর ধারায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সেই চার্জশিট মানতে নারাজ আনিসের পরিবার। সিবিআই তদন্তেই অনড় থেকে ডিভিসন বেঞ্চের দ্বারস্থ তাঁরা।
ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি:
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) সিঙ্গল বেঞ্চ সিট-এর তদন্তে আস্থা রেখেছিল। সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্চ করে, সিবিআই তদন্তের দাবিতে ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench) গিয়েছে আনিস খানের পরিবার। আজ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সেই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা।
প্রথম থেকেই আনিসের পরিবার এই মৃত্যুতে খুনের অভিযোগই করে এসেছে। তাদের নিশানায় ছিল রাজ্য পুলিশ। সেই কারণেই রাজ্য পুলিশ তদন্ত করুক তা চায়নি আনিসের পরিবার। প্রথম থেকেই আনিস মৃত্যু-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি করে এসেছে তারা। সিটের চার্জশিটের পরে ফের ওই দাবি নিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার।
কোন ঘটনা:
কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক নিয়ে, ১৮ ফেব্রুয়ারি আনিসের প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট করা হয়। সেই রাতেই ন’জনের দল আনিস খানের বাড়িতে হানা দেয়। পুলিশকর্মীরা আনিস খানের বাড়িতে ঢোকার পর, তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় আনিস খানের। আনিসের পরিবার অভিযোগ করেছিল, আনিসকে ওপর থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। যদিও চার্জশিটে বলা হয়েছে, পুলিশের অভিযান ত্রুটিপূর্ণ ছিল। চার্জশিটে খুনের কোনও ধারা দেওয়া হয়নি! গাফিলতির জেরে মৃত্যু। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জোর করে বাধা দেওয়া, জোর করে আটকে রাখা এবং জোর করে বেআইনিভাবে বাড়িতে ঢোকার মতো অভিযোগ রয়েছে চার্জশিটে। যা মানতে নারাজ আনিসের পরিবার।
আনিস খানের বাবা সালেম খান বলেছিলেন, 'আমার সিটের চার্জশিটের ওপর ভরসা নেই, আশা নেই। আমি ওকে ভরসাও করি না। কেন করিনা, যে পুলিশ সিট গটন করেছে, সেই পুলিশই আমার ছেলেকে আমার চোখের সামনে ওপর থেকে মেরে ফেলে দিয়ে গেল মাটির তলায়। আমায় সিবিআই তদন্ত দাও।' সিটের চার্জশিটের সমালোচনা করেছেন আইনজীবীদের একটি অংশও।
আরও পড়ুন: নগদ না পেয়ে 'গোঁসা', ১০ হাজার টাকা মিষ্টি নষ্ট দুষ্কৃতীদের