কলকাতা: হাইকোর্টের (Kolkata High court) নির্দেশে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য আনিস খানের দেহ তুলতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ল পুলিশ। সঙ্গে ছিলেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সিটের সদস্যরা। আনিসের (Amish Khan) দেহ তোলার জন্য অনুমতি নিতে পুলিশ আনিসের (Amish Khan) বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করতেই গ্রামবাসীরা বাধা দেন। কার্যত পুলিশকে ধাওয়া করে গ্রামছাড়া করেন তাঁরা।


এর আগে গতকাল রাতে আনিসের বাবাকে নোটিস দিয়ে পুলিশ জানায়, আজ ভোরে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের জন্য দেহ তোলা হবে। কিন্তু আনিসের বাবা সালেম খান সিটকে জানান, তিনি অসুস্থ। তাই সোমবার সকালে যেন ময়নাতদন্ত করা হয়। এর পরও এদিন ভোরে আনিসের গ্রামে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে।


গতকাল হাওড়ার আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্যমৃত্যুর পর তাঁর বাড়িতে গেলেন আক্রান্ত আমরা সংগঠনের সদস্যরা। অম্বিকেশ মহাপাত্র ছাড়াও প্রতিনিধিদলে ছিলেন  সুটিয়ার নিহত প্রতিবাদী বরুণ বিশ্বাসের দিদি সহ অন্য সদস্যরা।  আনিসের বাবা সালেম খানের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। পরে আক্রান্ত আমরার তরফে জানানো হয়, বিষয়টি জাতীয় মানবাধকার কমিশন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনকে জানাবেন তাঁরা। 


উল্লেখ্য, আনিস খুনের সনাক্তকরণ ঘিরে টানাপোড়েন। অব্যাহত আনিসের বাবার দাবি, ঘটনার রাতে তাঁকে যে পুলিশকর্মী আটকে রেখেছিলেন, ধৃতদের মধ্যে সেই ব্যক্তি নেই। বিস্তর টালবাহানার পর এদিনই জমা দেওয়া হল আনিসের মোবাইল ফোন। পাশাপাশি, দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে রাজি পরিবার।


ছাত্রনেতা আনিস খুনে অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া ঘিরে দিনভর চলল নাটকীয় টানাপোড়েন।আনিস খানের বাবার দাবি,  ১৮ ফেব্রুয়ারির রাতে যে পুলিশকর্মী বন্দুক দেখিয়ে নীচে আটকে রেখেছিলেন, ধৃত দু’জনের মধ্যে সেই ব্যক্তি নেই। 


মৃত আনিস খানের বাবা সালেম খান জানিয়েছেন, পুলিশ উর্দি পরে যে এসেছিল। তাঁকে ছাড়া আমি চিহ্নিত করতে পারব না। বাকি লোকেদের কী করে চিনব? উর্দিওলা তো ধরা পড়ে না।
 
এদিন উলুবেড়িয়া উপ সংশোধনাগারে আনিসের বাবার যাওয়ার নিয়ে দিনভর চলে টানাপোড়েন। দুপুরে সিটের দুই প্রতিনিধি আনিসের বাবাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এলেও, তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। 


শেষপর্যন্ত আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার পর, উলুবেড়িয়া সংশোধনাগারের উদ্দেশে রওনা দেন আনিসের বাবা। বিস্তর টালবাহানার পর শেষপর্যন্ত টিআই প্যারেডের জন্য এলেন আনিসের বাবা।


আদালতের নির্দেশে আনিসের মোবাইল ফোন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেওয়া হয়। পাশাপাশি, মৃতদেহ তুলে আনিসের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে রাজি হয়েছে পরিবার। এদিন সন্ধ্যায় এবিষয়ে পরিবারকে নোটিস দেয় সিট। যেখানে শনিবার ভোরে দেহ তোলার কথা বলা হয়। কিন্তু ২দিন সময় চান বাবা।  


এই পরিস্থিতিতে কবে আনিসের দেহ তোলা হবে, তা স্পষ্ট করেনি সিট। অন্যদিকে, এদিন বিকেলে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ বাম নেতারা যান মৃত আনিসের বাড়িতে।


আক্রান্ত আমরা সংগঠনের তরফে অম্বিকেশ মহাপাত্র, নিহত শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসের দিদি, কথা বলেন ছাত্রনেতার পরিজনদের সঙ্গে। সিটের উপর আস্থা রেখেছে হাইকোর্টে। সিট তো ভালই কাজ করছে। সব মিলিয়ে আনিস খুনের সাত দিন পরেও, কাটছে না রহস্য।