সুদীপ্ত আচার্য, আবির দত্ত ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং রুখতে প্রায় দেড় দশক আগে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছিল রাঘবন কমিটি (Raghaban Committee)। র‍্যাগিং আটকাতে বারবার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। কিন্তু তারপরও যাদবপুরের ছাত্রমৃত্য়ুতে উঠল সেই র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ। ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চ র‍্যাগিং-বিরোধী নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে ছিলেন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্য়ায়। যাদবপুরের ঘটনায় তাঁর গলায় শোনা গেছে আক্ষেপের সুর।


ওষুধ আছে, কিন্তু তার প্রয়োগ নেই ! আর তাই আজও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শরীরে, রয়ে গেছে র‍্যাগিংয়ের মতো অসুখ ! যার পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন নদিয়ার মানুষটি। সন্তান হারানোর যন্ত্রণা, গত কয়েকদিনে জীবনটাকে ছারখার করে দিয়েছে। দিন যত যাচ্ছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্য়ুতেও সেই র‍্যাগিংয়ের তত্ত্বই ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। অথচ, র‍্যাগিং রুখতে আজ থেকে প্রায় দেড় দশক আগে নির্দেশ দিয়েছে স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)। একই উদ্দেশে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে রাঘবন কমিটি। রয়েছে UGC-র নির্দেশিকাও। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, 'সুপারিশের অর্ধেকও যদি মেনে চলা হত, তাহলে ছেলেটাকে এভাবে প্রাণ হারাতে হত না।'


১৯৯৯ সালে একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে UGC-কে র‍্যাগিং রুখতে নির্দেশিকা জারির কথা বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০০১ সালে একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, কোনও ছাত্র র‍্যাগিংয়ের শিকার হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে এফআইআরের দায়িত্ব নিতে হবে। ২০০৭ সালে কেরলের একটি মামলার প্রেক্ষিতে রাঘবন কমিটি তৈরি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটির মাথায় ছিলেন সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর আর কে রাঘবন (RK Raghban)।

র‍্যাগিং রুখতে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছিল সেই কমিটি, যেমন, হস্টেলে সিনিয়র ও জুনিয়রদের আলাদা রাখতে হবে। UGC-র ফোন নম্বর চালু করতে হবে, যেখানে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। তা নিয়ে প্রচার চালাতে হবে। এরপর আবার, ২০০৯ সালে র‍্যাগিং রুখতে বেশ কিছু নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরিজিত্‍ পাসায়াত ও অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ ৷সেখানেও বলা হয়, হস্টেলে নতুন ও পুরনো পড়ুয়াদের আলাদা রাখতে হবে।
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মনোবিদদের সাহায্যে সেল তৈরি করতে হবে। নতুন ও পুরনো পড়ুয়াদের নিয়ে যৌথ কর্মশালার মতো পদক্ষেপ করতে হবে।
অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি এবং অ্যান্টি র‍্যাগিং স্কোয়াড তৈরির বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে হবে। কিন্তু, তার প্রায় দেড় দশক পরও এক পড়ুয়ার মৃত্য়ুতে
উঠছে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ। যা শুনে আক্ষেপের সুর ঝরে পড়েছে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্য়ায়ের গলায়। যিনি নিজে র‍্যাগিং রুখতে নির্দেশ জারি করেছিলেন।




আরও পড়ুন- প্রাণের বিনিময়ে নড়ল টনক? যাদবপুরের হস্টেলে র‍্যাগিং বিরোধী হোর্ডিং

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial