কলকাতা: পড়ুয়ার প্রাণের বিনিময়ে টনক নড়ল যাদবপুরের? ছাত্রমৃত্যুর ৪ দিন পর হস্টেলে র্যাগিং বিরোধী হোর্ডিং। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে অ্যান্টি র্যাগিং হোর্ডিং কর্তৃপক্ষের। ইউজিসি-র প্রতিনিধিরা আসার আগে তড়িঘড়ি তৎপরতা। দিনের পর দিন চলছিল র্যাগিং, এতদিনে ঘুম ভাঙেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের?
হস্টেলে র্যাগিং বিরোধী হোর্ডিং: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। আর এই মৃত্যুতে সামনে এসেছে র্যাগিং তত্ত্ব। ইতিমধ্যেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তনী সহ আরও দুই পড়ুয়াকে। এই ঘটনায় এবার UGC-র স্ক্যানারে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। র্যাগিং রুখতে নির্দেশিকার পরেও কেন পদক্ষেপ নয়? কোন নিয়ম মানা হয়েছে, আর কী মানা হয়নি, তা জানতে রিপোর্ট তলব করেছে UGC। পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে UGC-র প্রতিনিধিদল। আর ছাত্র মৃত্যুর ৪ দিন পর এবার মেন হস্টেলে অ্যান্টি র্যাগিং হোর্ডিং পোস্টার দিল কর্তৃপক্ষ।
ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় সামনে এসেছে নতুন তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, সিনিয়রদের সঙ্গে আলাপ-পর্বের গোটাটাই ভিডিয়োয় তুলে রাখা হত। প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মানসিক নির্যাতনের সময়েও ভিডিয়ো করা হচ্ছিল বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন। ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী ও দুই পড়ুয়া মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্তর মোবাইল ফোন পাঠানো হচ্ছে ফরেন্সিক ল্যাবে। পুলিশ সূত্রে খবর, ভিডিয়ো তুলে ছাত্রের মৃত্যুর পর তা মুছে দেওয়া হয়েছিল কি না, জানতেই ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। ভিডিয়ো তোলার বিষয়টি প্রথম বর্ষের অন্যান্য পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে পুলিশ। গতকাল যাদবপুর থানায় পড়ুয়া ও প্রাক্তনী মিলিয়ে ৭ জনকে গভীর রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পাশাপাশি, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত ৩ জনকেও লালবাজারে জেরা করা হচ্ছে।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বৈঠক ডাকা হয়। ক্যাম্পাস ও হস্টেলে সিসি ক্যামেরা লাগানো, বহিরাগতদের আনাগোনা, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর নেশার আখড়া হয়ে ওঠার অভিযোগ-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। মেন হস্টেলের যে ব্লক থেকে পড়ে পড়ুয়ার মৃত্যু হয়, সেই ব্লকের ভারপ্রাপ্ত সুপারকে তলব করা হয়। এছাড়া, মৃত্যুর আগে ও পরে ঘটনাক্রম জানতে এক পড়ুয়াকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এত ছাত্রের সামনে কীভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, তা জানতে চাইবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। হস্টেল ও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কোথাও কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর পরেই বারবার নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ উঠছে। দায় কি এড়াতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: Train Cancel: দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় বাতিল প্রচুর দূরপাল্লার ট্রেন, যাত্রী দুর্ভোগের আশঙ্কা