মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল : বোলপুরের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে সোজা আসানসোল। ঘণ্টা দেড়েকের জিজ্ঞাসার পর 'তদন্তে অসহযোগিতা'র অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁকে আসানসোল আদালতে পেশ করার জন্য বোলপুর থেকে গাড়ির কনভয়ে পাড়ি দেওয়া হয় সেই উদ্দেশ্যে। গ্রেফতারের পর প্রথামাফিক মেডিক্যাল টেস্ট করানোর জন্য আসানসোল বা দুর্গাপুরের কোনও সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁকে, তারপরই আজই গরুপাচারকাণ্ডে যোগের জেরে পেশ করা হতে পারে আসানসোল আদালতে।


বোলপুর থেকে আসানসোলের পথে কার্যত কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কনভয় করে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলকে  (Anubrata Mandal)। আর তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি তথা রাজ্য রাজনীতির দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে এভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া দেখতে মাঝের গোটা রাস্তার একাধিক জায়গায় কার্যত জমে যায় ভিড়। অনেক জায়গাতেই উৎসাহী জনগণকে দেখা যায় অনুব্রত মণ্ডলকে এভাবে নিয়ে যাওয়ার ছবি ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে। কাউকে কাউকে আবার ব্যঙ্গ করে হাততালি দিতে বা কটূক্তি করতেও শোনা যায়।


দিনকয়েক আগেই এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তখন তাঁকে ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তৃণমূল নেতা যখন এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন, তখন জনৈক এক হাসাপাতালে ভর্তি রোগীর আত্মীয় অনুব্রত-র উদ্দেশে ছুড়ে দিয়েছিলেন 'গরু চোর' বিদ্রুপ।


প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) পর তৃণমূলের (TMC) আরও এক হেভিওয়েট নেতা কেন্দ্রীয় এজেন্সির জালে। গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল। গতকাল হাজিরা এড়ানোর পর আজ সকালে আদালতের নির্দেশনামা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে বোলপুরের নীচুপট্টিতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। বাড়ির সকলের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। 


সিবিআই সূত্রে খবর, এর আগে গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। আজ ওই চিকিত্সকের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিত্সককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিত্সক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন, তাও জানতে চায় সিবিআই। খবর সূত্রের। 


গরুপাচার মামলায় (Cow Smuggling Scam) ১০ বার অনুব্রতকে তলব করে সিবিআই (CBI)। ৯ বার হাজিরা এড়াল তৃণমূল জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে গতকালও হাজিরা এড়ান অনুব্রত। গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন।


আরও পড়ুন- গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কী বললেন অনুব্রত