প্রকাশ সিনহা ও কৌশিক গাঁতাইত, আসানসোল : রক্তপাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি। অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) শারীরিক অবস্থাও হাসপাতালে ভর্তি করার মতো নয়। শরীরের সমস্ত প্যারামিটার স্বাভাবিক বলে জানালেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের (Asansol Jail Hospital) সুপার। অতএব, বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে ফিরতে হল জেলেই।
গতকাল সিবিআই আদালতের (CBI Court) বিচারককে অনুব্রত জানিয়েছিলেন, তাঁর ফিসচুলা ফেটে গেছে। রক্তপাত হচ্ছে। এরপরই আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক অনুব্রতর চিকিৎসার নির্দেশ দেন। রাতে জেলের ওয়ার্ড থেকে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে জেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে। যেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানিয়ে দেওয়া হয় অনুব্রত-র শারীরিক অবস্থা হাসপাতালে ভর্তি করার মতো নয়। যারপরই ফের জেলে ফিরতে হয় হেফাজতে থাকা বীরভূমের তৃণমূল সভাপতিকে। এমনিতেই গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ আদালত (Asansol Special Court )।
এদিকে, দিল্লি যাত্রা আটকাতে একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার কোনও আদালতেই স্বস্তি পাননি গরুপাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) ধৃত অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চেয়ে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে (Delhi Rous Avenue Court) আর্জি জানিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। ১৯ ডিসেম্বর অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (Production Warrent) জারি করেছিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত।
তৃণমূল নেতার হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে, আইনজীবী বলেছিলেন ২১ ডিসেম্বর দিল্লি হাইকোর্ট ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলা মুলতুবির নির্দেশ দিয়েছিল। তখন ED তাঁদের মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছিল যে, ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট কার্যকর করবেন না। অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে আসবে না। তাহলে কেন আবার তাঁকে দিল্লি নিয়ে আসতে তৎপর হয়েছে ED ? দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি, অনুব্রতর আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আপনি যে ED-র দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা বলছেন, তার কি কোনও রেকর্ড আছে? সেটা না থাকলে, কীভাবে অনুব্রত মণ্ডলকে সুরক্ষাকবচ দেব ? এরপর আগামী সোমবার পর্যন্ত, অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রা আটকানোর আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। সেই সঙ্গে সোমবারই মামলার নিষ্পত্তির আবেদন করেন তিনি। তখন বিচারপতি আবার বলেন, এই মুহূর্তে তেমন কোনও নির্দেশ দিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন- ৬১৮ জনের পর ১৫৭, চাকরি গেল আরও 'অযোগ্য' শিক্ষকদের, তালিকায় কারা ?