কলকাতা: মুখে কুলুপ আঁটার ধাত একেবারেই ছিল না তাঁর। বরং কথায় কথায় বাক্যবাণ ছুটত মুখে। কখনও তাঁর নিশানায় থাকতেন বিরোধী শিবিরের নেতারা। কখনও আবার নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদেরই তীব্র কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাক্যবাণ থেকে রক্ষা পাননি প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষও। 


বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য একাধিক বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন অনুব্রত


২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বীরভূমে বিরোধীদের দমিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে ‘মুক্ত গণতন্ত্র’ নামক কবিতা লিখেছিলেন শঙ্খ ঘোষ।

‘মুক্ত গণতন্ত্র’ কবিতায় শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন—

 

যথার্থ এই বীরভূমি-

উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে

পেয়েছি শেষ তীরভূমি-

 

দেখে খুলে তোর তিন নয়ন

রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে

দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।

 

সবাই আমার কর‌ তোয়াজ-

ছড়িয়ে যাবে দিগ্ বিদিকে

মুক্ত গণতন্ত্র আজ।

 

শঙ্খ ঘোষের লেখা এই কবিতা নিয়ে পথে নামেন বিদ্বজনেরাও। তাতেই অনুব্রতর রোষে পড়েন কবি। একটি সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এক কবি আছে, কবি। আমরা জানতাম, রবীন্দ্রনাথ কবি, আমরা জানি, নজরুল কবি। উনি নাকি বলছেন, আমাকে রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। আমি এখনও বলছি, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। মিথ্যাবাদী কবি আমি নই। উন্নয়ন কি রাস্তায় দাঁড়িয়ে নেই? এটা অস্বীকার করতে পারবেন?’’

 


 

শঙ্খ ঘোষের ওই কবিতায় শাসকদলের প্রতি শ্লেষ ছিল বলে মনে করেন অনেকেই। সেই সূত্রেই কবির উদ্দেশে অনুব্রত বলেন, ‘‘কবি, তুমি দেখতে পাওনা? পিঠের চামড়াটা গুটিয়ে নুন-লঙ্কা মাখিয়ে দেব যখন বলেন দিলীপ ঘোষ, তুমি কেমন কবি? তুমি কী ধরনের কবি? নাম তোমার শঙ্খ। রাখাটা ভুল হয়েছে। শঙ্খের অপমান করা হয়।’’

 

গরুপাচার মামলায় সিবিআই-এর হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরই বিভিন্ন সময় তাঁর নানা মন্তব্য এখন ফিরে আসছে সকলের স্মৃতিতে। শঙ্খ ঘোষের উদ্দেশে তাঁর এই কটাক্ষও ভোলেননি অনেকেই। 

 

গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত

 

আসানসোল আদালত এ দিন অনুব্রতকে ২০ অগাস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে। তার পরই কলকাতার উদ্দেশে অনুব্রতকে নিয়ে রওনা দেয় সিবিআই। তাঁকে নিজাম প্যালেসে আনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁকে।