আবির দত্ত, কলকাতা: গরুপাচারের কোটি কোটি টাকা নগদে জমা করার অভিযোগ রয়েছে (Cattle Smuggling Case)। কালো টাকা সাদা করতে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) ভুয়ো ঋণের ব্যবসা করতেন বলেও এ বার দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে এমন দাবি করেছে ইডি। বলা হয়েছে, গরুপাচারের কালো টাকা সাদা করতে ভুয়ো ঋণ দেখানোর ফন্দি করেন অনুব্রত, যাতে ঋণ দেখিয়ে বাঁচতে পারেন।
কখনও ১০ লক্ষ, কখনও আবার ২৬ লক্ষ টাকার ঋণ দেখানো হয়!
গরুপাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। তাতে বলা হয়েছে, অনুব্রতর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারির আত্মীয় এই ভুয়ো ঋণের বিষয়টি সামলাতেন। কখনও ১০ লক্ষ, কখনও আবার ২৬ লক্ষ টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে দেখানো হয়েছিল। কালো টাকা সাদা করতে ২৫ দফার এমন ঋণ দেখানো হয়, সবমিলিয়ে ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয় তার আওতায়।
ইডি জানিয়েছে, মনীশের আত্মীয়, হাওড়ার বাসিন্দা মনোজ মেহনত 'অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রি অপারেটর' হিসাবে কাজ করতেন। তার বদলে পেতেন কমিশন। ২০১৯ সাল থেকে মনোজ তাঁর তিনটি পেপার কোম্পানি থেকে অনুব্রতকে ঋণ দেন। অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে থাকা ভোলে ব্যোম রাইস মিল, নীল ডেভলপার্স-সহ বিভিন্ন সংস্থার অ্যাকাউন্টে ঢোকে টাকা।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: 'ভোট লুঠের চেষ্টা করলে ভাল করে ট্রিটমেন্ট', বাঁকুড়ায় বেলাগাম দিলীপ
শুধু তাই নয়, অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের নামে নথিভুক্ত থাকা সংস্থার অ্যাকাউন্টেও ঋণের নামে কখনও ১৯ লক্ষ, কখনও ২৬ লক্ষ টাকা জমা করা হয়। ঋণ হিসেবে দেখাতে তার নথিও তৈরি করা হয় বলে দাবি ইডি-র। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৫টিরও বেশি লেনদেনের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকার ভুয়ো ঋণের বন্দোবস্ত করা হয়। অনুব্রত, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং তাঁদের নামে থাকা সংস্থাগুলিকে ভুয়ো ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলে দাবি ইডি-র।
কালো টাকা সাদা করতেই এমন পন্থা!
চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালে চূড়ান্ত হারে অনুব্রতর আয় বাড়ছিল। গরুপাচার থেকেই সেই টাকা আয় হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ইডি-র দাবি, আয়কর রিটার্নে সেই টাকা ঋণ হিসেবে দেখাতেই ভুয়ো ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। কালো টাকা সাদা করতেই এমন পন্থা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেেন তদন্তকারীরা।