পার্থপ্রতিম ঘোষ, ঝিলম করঞ্জাই, ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: গত শনিবার রাতে অনুব্রত মণ্ডলকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়ে কোথায় গেলেন চিকিৎসক? বাড়ি, ফ্ল্যাট, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে শুক্রবারও মিলল না হিটলারের খোঁজ। গত কয়েকদিনে তাঁকে দেখাও যায়নি বলে জানাচ্ছেেন স্থানীয়রা। আর অনুব্রতকে বেডরেস্টের পরামর্শ দেওয়া চিকিৎসক সামনে না আসায় দানা বাঁধছে রহস্য।

চিকিৎসক হিটলার চৌধুরীর দেওয়া মেডিক্য়াল সার্টিফিকেটকে হাতিয়ার করেই প্রথম দুবার পুলিশি হাজিরা এড়িয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। চিকিৎসক হিটলার চৌধুরীই অনুব্রত মণ্ডলকে ৫ দিন বেড রেস্টের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেইমতো বিশ্রাম নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার অনুব্রত হাজিরা দিয়েছেন SDPO অফিসে। কিন্তু সেই চিকিৎসক হিটলার চৌধুরী এখন কোথায়? তিনিও কি 'বিশ্রাম' নিচ্ছেন?সরকারি এই চিকিৎসক কোথায় রয়েছেন? তিনি সামনে আসছেন না কেন?

হিটলার চৌধুরী একইসঙ্গে সরকারি চিকিৎসক, BMOH অর্থাৎ ব্লক মেডিক্য়াল অফিসার অফ হেল্থ, আবার তিনিই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শান্তিনিকেতন মেডিক্য়াল কলেজের RMO...! নিয়ম অনুযায়ী যা তিনি করতে পারেন না বলে চিকিৎসকরাই জানাচ্ছেন। সরকারি চিকিৎসক হয়েও তিনি বেসরকারি মেডিক্য়াল কলেজের প্য়াডে অনুব্রত মণ্ডলকে মেডিক্য়াল সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার পরও কেন সামনে আসছেন না চিকিৎসক হিটলার চৌধুরী? কেন সমস্ত বিতর্কের ব্য়াখ্য়া দিচ্ছেন না?

দু দুবার চিকিৎসক হিটলার চৌধুরীর রামপুরহাটের ফ্ল্যাটে গিয়েও তাঁর দেখা মেলেনি। বন্ধ তালা। মঙ্গলবারের পর শুক্রবার, তাঁর প্রতিক্রিয়া জনতে রামপুরহাটের ফ্ল্যাটে পৌঁছেছিলেন এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি। কিন্তু ফের দেখা গেল তালাবন্ধ। অনুব্রতর চিকিৎসক হিটলার চৌধুরীর প্রতিবেশী বলছেন, 'ওনাকে কয়দিন আগে দেখেছিলাম। এখন আর পাচ্ছি না।' রামপুরহাটের পর মল্লারপুরেও দেখা গেল একই ছবি। খাঁ খাঁ করছে জবুনি গ্রামে চিকিৎসক হিটলার চৌধুরীর গ্রামের বাড়িও। ডাকাডাকি করে কারও সাড়া মিলল না। এদিন ফের হিটলার মণ্ডলকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেলেনি মেসেজের উত্তরও। সব মিলিয়ে, অনুব্রত মণ্ডলের চিকিৎসক রহস্য নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

অন্যদিকে, বোলপুর থানার আইসিকে অনুব্রত মণ্ডলের কু-কথাকাণ্ডে তোলপাড় পড়ে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে এবার মুখ খুললেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলছেন, 'অনুব্রত মণ্ডলের মাথায় যদি দিদির হাত না থাকত তাহলে আজকে জামিন অযোগ্য ওয়ারেন্টের পরে অনুব্রত মণ্ডল কীভাবে ঘুরে বেড়ায়? ফোনে কিন্তু উনি কোনওদিন ভদ্রভাষায় কথা বলেননি। এটা বোধহয় ওঁর জন্মগত একটা রোগ। সুতরাং এই যে লিটন হালদারকে যে কথাগুলো বলেছেন এটা খুবই কদর্য এটা মানে শোনা যায় না। কিন্তু, এটা যে উনি বলতে পারেন এ ব্য়াপারে কিন্তু আমার সেরকম কোনও সন্দেহ নেই। কারণ আমি নিজেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে বলতে পারি যে এটা কিন্তু হামেশাই শুনতে হয়েছে। কয়লাকে তুমি যতই ধোও তার রঙ কি কালো থেকে সাদা হবে?'