প্রকাশ সিনহা, বীরভূম: ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে অনুব্রত মন্ডল। গরু পাচার মামলায় ফের জেল হেফাজত অনুব্রতর। 


বিস্ফোরক দাবি:
গরুপাচার মামলায় আসানসোল আদালতে অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে বিস্ফোরক দাবি করল সিবিআই। আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, সম্প্রতি ১৭৭টি সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট সিজ করা হয়। বিচারক জানতে চান, এর সঙ্গে অনুব্রতর যোগ কোথায়। সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, এর মধ্যে বেশ কয়েকটি অ্য়াকাউন্টের টাকা আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্টে ঘুরে জমা পড়েছে দুটি চালকল সংস্থার অ্যাকাউন্টে। যে ২টি চালকলের সঙ্গে অনুব্রতর যোগ হয়েছে।  


যে ফর্ম দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, সেখানে দেখা যাচ্ছে একই ব্যক্তির সই। প্রোপোজার হিসেবে একই ব্যক্তির নাম। যাঁদের অ্যাকাউন্ট, তাঁদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তাঁরা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত অফিসে তাঁরা আধার কার্ড জমা দেওয়া দিয়েছিলেন। তারপরেই অ্যাকাউন্ট খুলে গিয়েছে।


সই কার?
সিবিআইয়ের দাবি, যাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট তাঁদের অনেকেই বলেছেন যে তাঁরা সই করতে পারেন না। তাঁরা টিপছাপ দেন। তাহলে সই কারা করল? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে। সিবিআইয়ের সন্দেহ অ্যকাউন্টের নথিতে সবকটি সই একই ব্যক্তি করেছে বলে তাদের সন্দেহ। সেই ব্যক্তিকেই এখন খুঁজছে সিবিআই। 


আগে কী হয়েছে...
সম্প্রতি সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে ১৭৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে সিবিআই, তা নিয়ে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমনকি সিবিআইয়ের অনুমান, ওই অ্যাকাউন্টগুলির নথিতে যে হাতের লেখা রয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে একজনই ওই নথিতে লিখেছে। তা নিয়ে আরও ভালভাবে বুঝতে হস্তলিপি বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।


সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে ১৭৭টি বেনামি অ্যাকাউন্টের হদিশ। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে ১০ কোটিরও বেশি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। ১৬০টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে শুধু ৫৪ টি অ্যাকাউন্টেই মিলেছে ৪ কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ।  তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বেশিরভাগ অ্যাকাউন্ট হোল্ডারই পেশায় চাষি। সিবিআই সূত্রে খবর, গরিব মানুষের কাছে অল্প দামে নগদে ধান কিনে চালকলে চাল করে খাদ্য দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিক্রিমূল্য হিসেবে পাওয়া চেক এই সব বেনামি অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। সিবিআইয়ের তলবে নিজাম প্য়ালেসে হাজির হয়েছেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। পরিস্থিতি ঠিক কীরকম তা খতিয়ে দেখতে এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি পৌঁছে যান সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের হরিপুর গ্রামে। সিউড়ির ব্যাঙ্কে সুন্দরী বসাকীর নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফর্মে সই করেছেন তিনি নিজেই। অথচ তিনি তা জানেনই না। তাঁর দাবি, তিনি সই করতেই পারেন না। তাহলে কে সই করল ফর্মে? সুন্দরী বসাকী চাষের কাজ করেন। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র ইউকো ব্যাঙ্কেই তার একমাত্র অ্যাকাউন্ট, যাতে আড়াই হাজার টাকা রয়েছে। অথচ সিউড়ির ব্যাঙ্ক থেকে তার নামে খোলা অ্য়াকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে। 


আরও পড়ুন: শীতের রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, বানারহাটে পুড়ে ছাই বাড়ি, দোকান