আবির দত্ত, বীরভূম: বীরভূমে বসেই মুর্শিদাবাদের কিছু জায়গায় গরুপাচার কন্ট্রোল করা হতো। অনুব্রত মন্ডলের হয়ে কাজ করতেন তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ী এনামুল হকের তরফে হয়ে পাচার সামলাত ইলামবাজারের হাটের দালাল শেখ আব্দুল লতিফ। সূত্রের খবর, গরুপাচার মামলার তদন্তে নতুন তথ্য মেলার দাবি সিবিআই-এর।


আরও বিস্ফোরক তথ্য:
সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের মা লতিফা খাতুনের নামে থাকা একটি সম্পত্তি দুই-দুইবার হাতবদল করে কম দামে কেনা হয়েছে বলে নথিতে দেখানো হয়। এই সম্পত্তি বেচাকেনার বিনিময়ে ইলামবাজারের হাট থেকে প্রচুর গরু নেয় এনামুল। তার নির্দেশেই আব্দুল লতিফ জঙ্গিপুর কাস্টমস অফিসে ১৬ বার নিলামে অংশ নেয়। জাল রসিদ তৈরির একটি অভিযোগও রয়েছে। । ৭০-৮০ লক্ষ টাকায় কেনা হয় গরু। ওই সব গরু বাংলাদেশে পাচার হয়েছে। সিবিআই সূত্রে দাবি, পাচার লুকোতে নেওয়া হয় কৌশল। জাল রসিদ তৈরি করে নিলামে কেনা গরু লোকাল হাটে বিক্রি করা হয়েছে বলে দেখানো হত। দাবি সিবিআই সূত্রে। 


অনুব্রততে জেরা:
গরুপাচার সংক্রান্ত এই তথ্য নিয়ে এবং আরও একাধিক বিষয়ে তথ্য পেতে এদিন অনুব্রত মন্ডলকে জেরা করবে সিবিআই।


১৭ কোটির ফিক্সড ডিপোজিট: 
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ২টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি।  এবার অনুব্রত মণ্ডল, তাঁর মেয়ে ও আত্মীয়দের প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ফ্রিজ করল সিবিআই। ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে ও ঘনিষ্ঠদের একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। একাধিক সংস্থার খোঁজও পেয়েছেন।


বুধবার দুপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে কথা বলতে চাননি অনুব্রত-কন্যা। তারপর অনুব্রতর বাড়ির কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যান গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, এসবিআই, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের একাধিক অ্যাকাউন্টে অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের ১৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট বা FD ফ্রিজ করেছে সিবিআই (CBI)।


কোথায় প্রশ্ন:
এই বিপুল টাকা কি গরু পাচারের? কোথা থেকে, কীভাবে এল এই বিপুল পরিমাণ টাকা? আর কোনও ব্যাঙ্কের অ্যাকউন্টে টাকা রয়েছে কিনা সেটাও এখন খোঁজ করছে সিবিআই। কবে এই ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়েছিল, কীভাবে ব্যাঙ্কে টাকা ঢোকানো হয়েছিল সেটাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই।


সরব বিরোধীরা:
এই ঘটনায় ফের গরুপাচার চক্র ও অনুব্রতর যোগাযোগ নিয়ে সরব বিরোধীরা। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি,  '১৭ কোটি নয় ১৭০০ কোটি টাকার স্ক্যাম।' আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস-সিপিএমও।

আরও পড়ুুন:  "ওরা একটা বোমা মারলে, ১০টা বোমা মারার ক্ষমতা আছে", বিস্ফোরক বিজেপি বিধায়ক