পার্থপ্রতিম ঘোষ, রাজীব চৌধুরী, আশাবুল হোসেন, কলকাতা: বোলপুর থানার IC-কে কদর্য ভাষায় হুমকি। সেই অডিও ভাইরাল হওয়ার পর চারদিন কেটে গেছে।এখনও অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, তাহলে কি রাজনৈতিক চাপের কাছেই মাথা নোয়াচ্ছে পুলিশ? তৃণমূলের পাল্টা যুক্তি, আইনি বিষয়, পুলিশ-প্রশাসন দেখছে।
আরও পড়ুন, কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ৮৯ ! এই ৪ টি বরো এলাকায় প্রকোপ সবচেয়ে বেশি..
অনুব্রত মণ্ডলের IC-কে অশ্রাব্য় ভাষায় হুমকির ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে চারদিকে প্রবল সমালোচনা! কিন্তু যে পুলিশের সঙ্গে তৃণমূলের দাপুটে নেতা এই আচরণ করেছেন, সেই পুলিশ কি উর্দিতে লাগা কালির দাগ ঝেড়ে ফেলতে আদৌ সক্রিয়? না কি তারা রাজনৈতিক নির্দেশ পালনেই বেশি আগ্রহী? ঘটনার পর ৪ দিন কেটে গেলেও এখনও অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি পুলিশ।২ বার তলব করেছে।অনুব্রত মণ্ডল ২ বারই তলব অগ্রাহ্য় করেছেন।২ বারই আইনজীবী মারফত জানিয়ে দিয়েছেন তিনি অসুস্থ তাই যেতে পারবেন না। বিজেপির রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, পুলিশ অনুব্রত মণ্ডলকে দেখে ভয় পায়। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের দেখে ভয় পায়। শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলকে বোলপুরের SDPO অফিসে হাজিরা দিতে বলে নোটিস দেয় পুলিশ। কিন্তু, অসুস্থতার কারণ জানিয়ে শনিবার সকালে SDPO অফিসের হাজিরা না দিলেও,ওইদিন বিকেলেই পার্টি অফিসে যান অনুব্রত মণ্ডল। দূরত্বের বিচারে দেখা যাচ্ছে,বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে বোলপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসের দূরত্ব মেরেকেটে ৫০০ মিটার।
যেখানে পার্টি অফিস থেকে আর দেড় কিলোমিটার গেলেই SDPO-র অফিস।আর তৃণমূলের পার্টি অফিস থেকে বোলপুর থানা মাত্র ১৫০ মিটার দূরে। অথচ না SDPO-র দফতর, না থানা। কোথাও এখনও অবধি হাজিরা দেননি অনুব্রত মণ্ডল! আর পুলিশও তা দেখে কার্যত চুপ করে বসে গেছে! দু বার অনুব্রত আসেননি, তাই গ্রেফতার তো দূরের কথা, তৃতীয়বার অত্য়ন্ত প্রকাশ্য়ে নোটিস দিয়ে তাঁকে ডাকার আর প্রয়োজন মনে করেনি পুলিশ!
প্রদেশ কংগ্রেস প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, পুলিশ এখন সরকারি দলের ধমকানোর একটা সাবজেক্ট হয়ে গিয়েছে। আমার খারাপ লেগেছিল সেই বীরভূমের নেতার (অনুব্রত মণ্ডল) ব্যপারে। পুলিশকে এরকম ওপেন গালাগালি দেওয়া। বাংলার মানুষ পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকে বিশ্বাস করে না। তার একটাই কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকে তো চলতে দেয় না।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন,'আইনি বিষয় পুলিশ প্রশাসন দেখছে। শীর্ষ নেতৃত্ব বীরভূম নজরে রাখছে৷ অনুব্রতর ক্ষোভ যাই থাকুক, ওই ভাষা তার ব্যবহার করা উচিত হয়নি।'পুলিশ কবে ডাকছে, সেটা বড় বিষয় নয়, অনুব্রত মণ্ডল কবে যেতে রাজি হবেন, সেটাই কি আসল বিষয়? বীরভূমে পুলিশের প্রশাসন না কি অনুব্রত মণ্ডলের শাসন চলে? প্রশ্ন বিরোধীদের।