প্রকাশ সিনহা ও সুকান্ত মখোপাধ্যায়, বীরভূম: অনুব্রত মন্ডলকে দিল্লি নিয়ে যেতে আদালত থেকে ইডি অনুমোদন আদায় করার পরই, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরনো একটি অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের নয়া মামলায় অনুব্রতকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। বীরভূমের দুবরাজপুর থানার লকআপে রয়েছেন তিনি। এবার তা নিয়েই উঠল বিস্ফোরক দাবি। অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাওয়া রুখতেই টাকার বিনিময়ে FIR করা হয়েছে। বিস্ফোরক দাবি করলেন অভিযোগকারী শিবঠাকুর মণ্ডলের এক আত্মীয়। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন বীরভূমের তৃণমূল সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ও।


অনুব্রত মন্ডকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইডি। দিল্লিযাত্রা রুখতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত মন্ডল। কিন্তু রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেন অনুব্রত মন্ডল। সেখানে স্বস্তি মেলে তাঁর। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুব্রতর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবে না এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। কারণ ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি স্থগিত রেখেছে দিল্লি হাইকোর্ট। পরবর্তী শুনানি ৯ জানুয়ারি হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। আপাতত ১৯ দিন তাঁকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে না ইডি।


কী অভিযোগ:
কিন্তু তারও আগে যাঁর জন্য অনুব্রত মন্ডলের দিল্লি যাত্রা থমকে যায় তিনি হলেন তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল। এক বছর আগে না কি, তাঁকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি সেদিন অভিযোগ করলেন, যেদিন দিল্লির আদালত ইডিকে অনুব্রতকে মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র দিল।


হঠাৎ কেন অভিযোগ?
এরপরেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠে অনুব্রতর দিল্লিযাত্রা রুখতেই কি এই মামলা দায়ের করা হয়েছে? অনুব্রত যাতে পুলিশি হেফাজতে থাকতে পারেন, সেই কারণেই কি এই পরিকল্পনা? এই নিয়েই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বীরভূমের জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্য়ায়ের গলায়। সাংবাদিক যখন জিজ্ঞাসা করছেন  অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি-যাত্রা আটকানোর জন্য় এই ব্য়বস্থা? তখন বীরভূমের তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'হ্যাঁ, ব্য়বস্থাই তো! ব্য়বস্থাই, একশোবার! ইডি এবং সিবিআই যেখানে মিথ্য়া করে একটা লোককে বিনা দোষে, দিনের পর দিন আটকে রাখার চেষ্টা করছে, আমরাও চেষ্টা করছি সেই লোকটাকে বাঁচাবার।'


এদিকে শিবঠাকুর মন্ডলের অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শিবঠাকুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাঁরই এক আত্মীয়। তাঁরই বাড়ির পাশে থাকেন তিনি। তাঁর অভিযোগ অনুব্রতকে বাঁচানোর জন্যই এই পরিকল্পনা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে এফআইআর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিবঠাকুর মন্ডলের আত্মীয় দীপক মণ্ডল। যদিও এ নিয়ে অভিযোগকারী শিবঠাকুর মণ্ডলের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


আরও পড়ুন: 'সব রিপোর্ট ক্যামাক স্ট্রিটে আসছে...', আবাস দুর্নীতি নিয়ে কাদের তোপ মদনের?