কলকাতা: লোকসভার ভোটের আগে রাজ্যে ইতিমধ্যেই সন্দেশখালিকাণ্ডে (Sandeshkhali Attack) উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। হামলার পর ইতিমধ্যেই সরব রাজ্যের বিরোধীরা। আর এহেন পরিস্থিতিতে কলকাতায় এলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তৃণমূলের সরকার করলেন তুলোধনা। নাম না করেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি,' দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাতে কেন চাইছে বাংলার সরকার? মুখ্যমন্ত্রী কি নিজেই লুঠের অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন ? '


এদিন তিনি বলেন, 'বাংলায় আইন-শৃঙ্খলার ভয়াবহ পরিস্থিতি। সারা দেশে যা হয় না, তা হয় বাংলায়। বাংলায় তোষণের রাজনীতি চলছে। দুর্নীতিগ্রস্তদের আশ্রয় দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। স্বামীজির জন্মদিনে বাংলার তরুণদের যুব উৎসবে অংশ নিতে বাধা', কলকাতায় এসে মমতার সরকারকে নিশানা অনুরাগ ঠাকুরের (Anurag Tahkur)। অনুরাগের সংযোজন,'দুর্নীতি চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে, ইডির উপরেও আক্রমণ হচ্ছে। জনগণের অর্থের হিসেব চাইলে, দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাতে কেন চাইছে বাংলার সরকার? মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের উপর থেকে কি মুখ্যমন্ত্রীর রাশ আলগা হচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী কি নিজেই লুঠের অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন, নাকি তাঁর কথা কেউ শুনছেন না? দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে তাঁর গুন্ডারা ঝাঁপিয়ে পড়ে, দেশে আর কোথাও যা দেখা যায় না', কলকাতায় এসে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রীর।


মূলত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি অভিযান ঘিরে সন্দেশখালিতে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে (ED Raid On TMC Leader House)।  ওইদিন ইডি,সিআরপিএফ জওয়ান থেকে সংবাদমাধ্যম, রেহাই পায়নি কেউই। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও।  বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, 'রাজ্যে কোনও আইনশৃঙ্খলা আছে বলে আপনার মনে হয়? তদন্ত আটকাতে মানুষের পয়সা খরচ করে মামলা করা হচ্ছিল ? তদন্তের আদেশ দিলেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হচ্ছিল।সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অধিকার প্রত্যেকেরই আছে। কিন্তু কী করার জন্য যাওয়া হচ্ছে ? আমি তো আজকে জানতে চাইবো মোট কত টাকা খরচ হল ? এই তদন্ত আটকানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে মোট কত কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গ সরকার খরচ করল ? ইডি যার খোঁজে গিয়েছিল, রাত ১২টার মধ্যে ইডি অফিসে গিয়ে তাঁর হাজিরা দেওয়া উচিত। ' 


অপরদিকে, গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)  হামলার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেই দায়ি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে শুভেন্দুর নিশানা করে বলেছিলেন, 'প্রবল চাপের মধ্যেও গুলি না চালিয়ে সংযম দেখিয়েছে সিআরপিএফ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি সামলেছে সিআরপিএফ। আরেকটা শীতলকুচির মতো ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল মমতার। সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছেন বীর জওয়ানরা'


আরও পড়ুন, রাম মন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পত্র পেয়ে কী প্রতিক্রিয়া 'রামায়ণ'-র অভিনেতার ?


যদিও কেন্দ্রীয় এজেন্সির অভিযান নিয়ে  পাল্টা নিশানা করেছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, 'ইডি গেলেই জন বিস্ফোরণ হবে। সবে তো এক জায়গায় হয়েছে, এবার বাংলাজুড়ে হবে', হুঁশিয়ারি পরিষদীয় মন্ত্রীর। ওদের ইডি, সিবিআই থাকলে, তাঁদেরও আছে দলের ছাত্র-যুব সংগঠন, বোঝালেন শোভনদেব। ক্যাগ রিপোর্টই বলছে বিজেপির আমলে লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে, সেখানে শেখ শাহজাহান তো কিছুই নয়, মন্তব্য শোভনদেবের। সন্দেশখালি ও বনগাঁয় ইডি-র ওপর হামলার ঘটনার রেশ কাটার আগেই বিতর্ক উসকে দেন শোভনদেব।