কলকাতা: এরাজ্যে ধনখড়ের পর তিনি রাজ্যপালের পদমর্যাদা নিয়ে আসার পর শুরুটা এমন ছিল না। রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের 'সংঘাত' শব্দটা তিনি অনেকটাই বুজিয়ে এনেছিলেন। সরস্বতী পুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সিভি আনন্দ বোসের বাংলা হরফের সঙ্গে হাতেখড়ি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজে 'বর্ণ পরিচয়' উপহার দিয়েছিলেন রাজ্যপালকে। এই অবধি সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সাজানো বাগানে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নন্দিনী চক্রবর্তীর ইস্যু উঠতেই ফাটল  ধরা শুরু। যদিও শুভেন্দুর ভাষায় 'ট্র্যাকে ফিরেছেন '! আর তারপর একে একে পঞ্চায়েত ভোট সহ হিংসা ইস্যু থেকে উপাচার্য নিয়োগে ধীরে ধীরে সেই ফাটল আরও বড় হয়। যদিও এতকিছুর মাঝেই দেখতে দেখতে বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে ১ বছর পূর্ণ করলেন সি ভি আনন্দ বোস। এদিন এবিপিকে দিলেন একান্ত সাক্ষাৎকার। আজ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। এদিকে শিল্প সম্মেলনে ডাক পাননি রাজ্য়পাল সিভি আনন্দ বোস। যদিও তিনি আজ বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কোনও সংঘাত নেই।'


১০ কত দেবেন নিজেকে ? প্রশ্ন করতেই এদিন হেসে রাজ্যপাল বলেন, 'সেটা ঠিক করবে আমজনতা। শুধুমাত্র পুলিশ দিয়ে হিংসা বন্ধ করা যাবে না, কিন্তু পুলিশি সক্রিয়তা জরুরি। তবে রাজ্য সরকারের উচিত হিংসা বন্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কোনও সংঘাত নেই। সংঘাত তখনই হয়, যখন দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান করে। আমি কারও বিরুদ্ধে যাব না বলে ঠিক করেছি। আমি শুধু সত্য ও সঠিক বিষয়ের পক্ষে যাব। আমাকে শিল্প সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতেই হবে, তার কোনও মানে নেই। রাজ্যে উন্নয়ন হলেই রাজ্যপালের খুশি হওয়া উচিত। উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দেবে, সেই অনুযায়ী কাজ হবে। মানুষ সমালোচনা করতেই পারে, গণতন্ত্রে প্রত্যেকেরই বাক্ স্বাধীনতা আছে।'


আরও পড়ুন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিখায় ভেসে উঠল যুবতীর দেহ ! আঁতকে উঠলেন কর্মচারীরা


 প্রসঙ্গত, রাজ্যে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসংস্থানকে প্রধান লক্ষ্য বলেছিলেন। তবে রাজ্যে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগের যত বড় প্রস্তাবই আসুক না কেন, আদতে তা কতটা ফলপ্রসু হয়েছে ? কর্মসংস্থান হয়েছে কতজনের ? এসব প্রশ্ন আগেও তুলেছে বিরোধীরা। সঙ্গে এগারো সালের পর 'শিল্প দূরীকরণ' বলে তীব্র কটাক্ষ তো উপরিপাওনা ছিলই। আর তা আরও বেড়ে গিয়েছিল টাটা ইস্যুতে। তবে দেখতে দেখতে অনেকগুলি বছর পার। বছর পেরোলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে। আজ থেকে ফের শুরু হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS)। আর ঠিক তার আগে লগ্নি নিয়ে রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।  'এতদিনে কত লগ্নি হয়েছে, কত কর্মসংস্থান হয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য কি সামনে আনবে রাজ্য সরকার?' এক্স হ্যান্ডলে কটাক্ষ করে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু।