ঝিলম করঞ্জাই ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: অ্যাডিনো(Adenoviruses) আতঙ্কের মধ্যেই হাসপাতালে ভয়াবহ ছবি। একাধিক পরিবারের দাবি, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুর। তার মধ্যেই মারণ রোগের বিরুদ্ধে অসম লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ (Kolkata News)। 


মারণ রোগের বিরুদ্ধে অসম লড়াই!


কারও বয়স ১০ মাস, তো কারও এক বছর। জীবন শুরু হওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে একের পর এক শিশু। কোলের সন্তান হারানোর শোকে পাথর পরিবার। আতঙ্কের নাম অ্যাডিনো ভাইরাস। এই মারণ রোগের বিরুদ্ধেই প্রায় ৩৫ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া, 
বাগুইআটির জ্যাংড়ার বাসিন্দা সুদেষ্ণা বসু। জানুয়ারিতে অ্যাডিনোয় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় সে।


আপাতত সুদেষ্ণার ঠিকানা বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতাল। এতদিনে তার চিকিৎসার খরচ ৪৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। সুদেষ্ণার বাবা LIC-র এজেন্ট। তার পক্ষে এই খরচ সামলানো একপ্রকার অসাধ্য। ছোট্ট মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে লড়ে চলেছেন তিনিও। কিছুদিন আগে সুদেষ্ণার বোনও অ্যাডিনো আক্রান্ত হয়। সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছে সে। ১৯ জুন সুদেষ্ণার জন্মদিন। তার আগে সে হাসিমুখে বাড়ি ফিরবে, এটুকুই চায় জ্যাংড়ার বসু পরিবার।


আরও পড়ুন: Rudranil Ghosh: ‘মাটির মানুষ লেবেল তোমার…’,কবিতায় ফের মমতাকে নিশানা রুদ্রনীলের

এক দিকে, অ্যাডিনোর মারণ থাবায় একের পর এক খুদের প্রাণ যাচ্ছে। তার মধ্যেই উঠে আসছে ভয়ঙ্কর ছবি। পরিবারের দাবি, আইসিইউ-এর জন্য দিনভর ছোটাছুটি করেও কোনও দিশা মেলেনি, চোখের সামনে দেখতে হয়েছে আদরের সন্তানের মৃত্যু। রবিবার সকালেই বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্য়ু হয়, দেগঙ্গার কার্তিকপুরের বাসিন্দা আড়াই বছরের শিশুর। তারবাবা এবিপি আনন্দকে বলেন, "আজ সকালে একজন মারা যেতে আইসিইউ-তে বেড পেলাম একটা। কিন্তু তত ক্ষণে আমার বাচ্চা শেষ হয়ে গিয়েছে। আগে পেলে হয়ত বাঁচাতে পারতাম।"


আবার এ দিনই বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়, দেগঙ্গার বাসিন্দা আড়াই মাসের এক ফুটফুটে শিশুর। সন্তানের মৃত্যুতে রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "এর জন্য একমাত্র সরকার দায়ী। যা অবস্থা,এ কটি শিশুও বাঁচবে না।"


অ্যাডিনোর মারণ থাবায় একের পর এক খুদের প্রাণ যাচ্ছে

অন্য দিকে, আইসিইউ-এর খোঁজে রানাঘাট জেলা হাসপাতাল, কল্যাণী জেএনএম ঘুরে শনিবার বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি হয় আট মাসের এক শিশু। আক্রান্তের ঠাকুমা শম্পা অধিকারী বলেন, "বাচ্চা খুব ক্রিটিক্যাল। আইসিইউ না পেলে বাঁচবে না। সুপারকে বলুন, কেউ দেখুন একটু।"