কলকাতা: কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারি নিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত। এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষও। নাম না করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করলেন তিনি। কবিতার ছলে জোড়াফুল শিবিরকে আক্রমণ। আজ যে পুলিশে ভর করে আজ 'ঠ্যাং ভাঙা হচ্ছে', কাল সেই পুলিশই শিক্ষা দেবে বলে বার্তা দিলেন।


সাগরদিঘি উপনির্বাচনে জয়ের পর থেকেই বাংলায় নতুন করে চাঙ্গা কংগ্রেস। তাতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে কৌস্তভের গ্রেফতারি। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই রবিবার এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন রুদ্রনীল। নিজের লেখা ব্যাঙ্গাত্মক কবিতা পড়ে শোনান তিনি, যার ছত্রে ছত্রে ছিল তৃণমূল, সর্বোপরি মমতার উদ্দেশে কটাক্ষ।


এবিপি আনন্দে এ দিন যে কবিতা পড়ে শোনান রুদ্রনীল, তা হল-


'আর কত মুখ বন্ধ করে বাঁচবে তুমি রানি


তেষ্টা পেলেও জল দেবে না, দেবে না কেউ পানি।


একুল-ওকুল দু'কুল গেছে চোর বাঁচাতে গিয়ে


ছিপ নিয়ে গেল কোলাব্যাঙে, নৌকা টানে টিয়ে।


সত্যি কথা বললে যে কেউ ভাঙছো তাদের ঠ্যাং


এই পুলিশই কালকে তোমায়, দেখো করবে ড্যাডাংড্যাং।


তোমার পোষা দালাল যত সরছে চুপি চুপি


বুঝছো না কি খুলছে সবাই তোমার দেওয়া টুপি!


বিসর্জনের বাজনা তুমি করলে নিজেই ভাড়া


নন্দীগ্রামে  আর সাগরদিঘির তোমার কড়া নাড়া।


যতই তুমি পড়ছো ধরা বলছো আজেবাজে


মাটির মানুষ লেবেল তোমার আর লাগে না কাজে।'


রুদ্রনীলের এই কবিতার মর্মার্থ বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। মমতাকে নিয়ে লেখা বই নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন কৌস্তভ। তার পরই ভোররাতে বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে এসে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে ঘিরে উত্তাল হয়েছে বাংলা। মুখ খুলেছেন বিশিষ্ট জনেরাও। পুলিশ পাঠিয়ে বাক স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাই রুদ্রনীলের কবিতাতেও তা ফুটে উঠেছে। 


সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সম্প্রতি জয়লাভ করে রাজ্যে নতুন করে চাঙ্গা হয়েছে কংগ্রেস। বিধানসভায় শূন্য হয়েও ফের ফেরার অধিকার অর্জন করেছে। তার উপর কৌস্তভের গ্রেফতারিতে বিরোধী দল হিসেবেও ফের অক্সিজেন পেয়েছে দল। সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে রুদ্রনীলের কবিতায়। নন্দীগ্রামের উল্লেখ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনশুভেন্দু অধিকারীর কাছে মমতার পরাজয় বোঝাতেই যে করা হয়েছে, সন্দেহ নেই তাতেও। 


সব শেষে 'মাটির মানুষ লেবেল তোমার আর লাগে না কাজে' লাইনটি কবিতায় যোগ করেছেন রুদ্রনীল। এতে কোন দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, তা বোঝা দুঃসাধ্য নয়। কারণ তৃণমূলকে বরাবরই 'মা-মাটি-মানুষে'র সরকার বলে উল্লেখ করেছেন মমতা থেকে দলের নেতা-মন্ত্রী-কর্মীরা, যাতে সমাজের তৃণমূল স্তরের মানুষের সঙ্গে সংযোগ বোঝানো যায়। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনাবলীতে তৃণমূলের সেই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। রুদ্রনীলের কবিতাতেও তার উল্লেখ রয়েছে।