ঝিলম করঞ্জাই আশাবুল হোসেন ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Elections 2024)। আর তার আগেই জাতীয় দলে স্বীকৃতি হারাল তৃণমূল (TMC Loses National Party Status)। তাতে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বিভিন্ন মহল। লোকসভা নির্বাচনে আগে জাতীয় স্বীকৃতি হারানো আসলে অভিষেকের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকেই। তাঁদের মতে, দায়িত্বে হাতে আসার পর বার বার ভিন্ রাজ্যে দলের সংগঠন বিস্তারের কথা বলেছেন অভিষেক। গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে সেই কাজে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। তার পরেও জাতীয় স্বীকৃতি হারিয়ে তৃণমূলের আঞ্চলিক দল হয়ে রয়ে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে অভিষেকের ভূমিকাও। 


অভিষেকের ভূমিকাও  প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা


২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল কংগ্রেসকে জাতীয় দলের স্বীকৃতি দেয় নির্বাচন কমিশন। তার প্রায় সাত বছর পর জাতীয় দলের তকমা হারাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তাতে অভিষেকের ভূমিকাও  প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে, বারবারই তৃণমূলকে জাতীয় স্তরে শক্তিশালী করার কথা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।

২০২১-এর ৫ জুন তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর অভিষেক ট্য়ুইট করে বলেছিলেন, "আগামী দিনে দলনেত্রীর বার্তা দেশের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে দেব।" এর পর গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচনে নাম লিখিয়েছে তৃণমূল। সেখানে দলের হয়ে প্রচারে একেবারে মুখ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছে অভিষেক। বার বার তাঁর মুখে শোনা গেছে, তৃণমূলকে রাজ্য়ে রাজ্য়ে পৌঁছে দেওয়ার বার্তা।


আরও পড়ুন: Kurmi Agitation:নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের বৈঠক, রফাসূত্র অধরাই


সর্বভারতীয় স্তরে দলকে নিয়ে যাওয়া নিয়ে গত বছর জুলাই মাসে অভিষেক বলেন, "শুধু দার্জিলিং থেকে দেগঙ্গা, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপে সীমাবদ্ধ নয়। তৃণমূল ত্রিপুরায় ঢুকেছে, অসমে ঢুকেছে, গোয়ায় ঢুকেছে। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব মমতা দিয়েছেন। যতদিন না সর্বভারতীয় স্তরে, বিভিন্ন রাজ্যে, জোড়াফুল পৌঁছে দিতে পারছি, নিঃশ্বাস নেব না।" অভিষেকের বক্তব্য ছিল, "যদি আমরা কোনও রাজ্যে যাই, ছোট-বড়, সেখানে শুধু ভোটে লড়তে যাব না। যদি যাই তো রাজ্যে জিততে যাব।"


দলের অন্দরে অভিষেকের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন একাংশ


কিন্তু নির্বাচন এলে দেখা যায়, বাস্তবে কোনও রাজ্য়েই কোনও দাগ কাটতে পারেনি তৃণমূল। আর তার জেরেই এবার জাতীয় দলের মর্যাদা হারাতে হল তাদের। যার জেরে প্রশ্ন উঠছে, এটা কি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অভিষেকের ব্য়র্থতা নয়? তাই দলের অন্দরে অভিষেকের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন একাংশ। সেই নিয়ে বিরোধীদের তরফে উড়ে এসেছে কটাক্ষও। কারণ বিজেপি এমনিতেই জাতীয় দল। বিরোধী শিবিরের সিপিএম এবং কংগ্রেসও এখনও জাতীয় দলের তালিকায় রয়েছে। তালিকা থেকে বাদ গেল এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নাম।