সুদীপ্ত আচার্য, সন্দীপ সমাদ্দার ও হংসরাজ সিংহ,কলকাতা: নবান্নে (Nabanna) মুখ্যসচিবের (chief secretary) সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের (Kurmi community) বৈঠকে মিলল না কোনও সমাধান সূত্র। সরকারের তরফে কোনও প্রতিশ্রুতি মেলেনি, দাবি পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের সভাপতির। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজেশ মাহাতো।
প্রেক্ষাপট...
সাত-সাতটা দিন, প্রায় দেড়শো ঘণ্টা ধরে অবরোধ-বিক্ষোভ চলার পর, রাজ্য সরকারের আলোচনার বার্তা পেয়ে মঙ্গলবারই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজ। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, বুধবার নবান্নে কুড়মি সমাজের সঙ্গে মুখ্যসচিবের বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র মিলল না। এদিন দুপুর একটা নাগাদ নবান্নে পৌঁছয় পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের ২০-২৫ জন প্রতিনিধি। তাঁদের মধ্যে থেকে ৫ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। আদিবাসীদের তপশিলি উপজাতির মর্যাদা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলের অন্তর্ভুক্তি,২০১৭ সালে কেন্দ্রের আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রকের চেয়ে পাঠানো রাজ্যের CRI রিপোর্টের ওপর সাতটি পয়েন্টের ব্যাখ্যা আবার কেন্দ্রকে পাঠানো-সহ একাধিক দাবি নিয়ে এদিন প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দু-পক্ষের বৈঠক হয়। কিন্তু কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের দাবি, সরকারের তরফে কোনও প্রতিশ্রুতি মেলেনি। গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি, পুরুলিয়ার কুস্তাউর, কোটশিলা-সহ কয়েকটি জায়গায় ট্রেন ও জাতীয় সড়কে অবরোধ করে আদিবাসী সমাজের একাধিক সংগঠন। যার জেরে বাতিল করতে হয় ৫০০-রও বেশি ট্রেন। চরম ভোগান্তির শিকার হন হাজার হাজার যাত্রী। এরপর সোমবার রাতে প্রথমে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলেও সরকারের আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি আদিবাসী কুড়মি সমাজ। কিন্তু আন্দোলনকারীদের অপর অংশ, পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজ এদিন নবান্নে মুখ্যসচিবের বৈঠকে যোগ দিলেও, সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হল না! বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। কিন্তু সরকারের সঙ্গে আলোচনায় কোনও সদর্থক ফল না মেলার পর কি তা হলে একবার আন্দোলনের পথেই ফিরে যাবেন কুড়মি সমাজের একাংশ? উত্তর মিলবে ভবিষ্যতে।
আন্দোলনেও সরব বিজেপি...
দাবিদাওয়া আদায়ে যখন অবরোধ চলছে, তখনও শাসকদলকে নিশানা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, 'রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে'। কুড়মি আন্দোলন নিয়ে রাজ্য সরকারকে এই সুরেই নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, 'রেল ও সড়ক অবরোধ চলছে। মনে হচ্ছে রাজ্য সরকারের উপর আর আস্থা নেই। কেন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে না? এটা মুখ্যমন্ত্রীর প্ররোচনার ফল’।
আরও পড়ুন:কলকাতা পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ, ফিরহাদের পাল্টা ' প্রমাণ হলে আত্মাহুতি দেব'