কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান : দলের কর্মীদের একাংশের অন্তর্ঘাতের কারণেই হার হয়েছে আসানসোল দক্ষিণ ও কুলটিতে। এমনটাই দাবি করলেন এই দুই কেন্দ্রের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh) ও উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের দাবিকে সমর্থনও করেছেন পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সভাপতি।
উপলক্ষ্য ছিল যুব তৃণমূল সভানেত্রী সায়নী ঘোষের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান। আর আসানসোলের এই অনুষ্ঠানই বদলে গেল আত্মসমালোচনায়। তিনি বললেন, 'নির্বাচনের সময় যারা দলের বিরুদ্ধে খেলেছেন তাদের বিহিত হবে ।' শুধু তাই নয়, সায়নী আরও বলেন, 'শুধুমাত্র আমার ক্ষেত্রেই নয়, অন্যান্য জায়গাতেও যাঁরা দলবিরোধী কাজ করেছেন তাঁদেরকে যুব তৃণমূলে নেওয়া হবে না, আমার সাথেও যাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন সভায় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন না'
এর আগে সোমবারও দুর্গাপুরের কর্মিসভায় হুঁশিয়ারি দেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। তিনি বলেন, "তৃণমূল (TMC) করতে চাইলে নেতাদের বাড়ির বাজার করা যাবে না। তৃণমূল করতে চাইলে নেতাদের মেয়েকে স্কুল থেকে আনা যাবে না। এসব করতে চাইলে বাড়িতে চাকরি নিন, তৃণমূল করা যাবে না"। সেই সঙ্গে দলত্যাগীদের ফের দলে না ফেরানোরও বার্তা দেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী।
যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী হওয়ার আগে, এবারের ভোটে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন সায়নী ঘোষ। কিন্তু, বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের কাছে ৪ হাজার ৪৮৭ ভোটে পরাজিত হন তিনি। তাঁর এই হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে, দলের একাংশকেই দায়ী করেছেন সায়নী।
আসানসোল দক্ষিণের পাশাপাশি কুলটিও হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। মাত্র ৬৭৯ ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান তৃণমূল প্রার্থী। সেখানকার পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, '' তৃণমূলকে হারানোর ক্ষমতা অন্য কোনও দলের ছিল না, দলের একশ্রেণীর কর্মীর অন্তর্ঘাতের কারণেই হারতে হয়েছে। ভবিষ্যতে দলের নীতি মেনেই এঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে'।
এই পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীর অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছেন বারাবনির বিধায়ক ও জেলা তৃণমূল সভাপতি বিধান উপাধ্যায়। তিনি বলেন, " নির্বাচনের সময় বেশ কিছু দলীয় কর্মী দেওয়ালের ওপর বসে ছিলেন । তৃনমূল জিতলে তাদের দিকে , বিজেপি জিতলে তাদের দিকে ঝাঁপ দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন তারা ।'
অন্যদিকে এ ব্যাপারে বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি তথা বারাবনির পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অরিজিৎ রায় বলেন, ''যে দলের কোন নীতি আদর্শ নেই তাদের তো এরকম হবেই ।' তিনি দাবি করেন, এখনও বহু তৃণমূল কর্মী তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন ।