কলকাতা: নম্বর-বিতর্কে এ বার ববিতা সরকারকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা আলাদা করে রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikary) কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর (Ankita Adhikary) কাছ থেকে পাওয়া টাকা আলাদা করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনামিকা রায়ের (Anamika Roy) করা মামলায় ববিতাকে ১৫ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখার নির্দেশ (SSC Scam)।
ববিতা সরকারকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা আলাদা করে রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
ববিতা নন, চাকরির প্রকৃত দাবিদার তিনিই, দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ অনামিকা। অনামিকার করা মামলায় হাইকোর্টে সোমবার ফের শুনানি রয়েছে। তার শুনানিতেই বৃহস্পতিবার ববিতাকে ১৫ লক্ষ টাকা আলাদা করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রায় বিপক্ষে গেলে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে টাকা জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি চাকরি প্রার্থীদের নম্বরের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তার পরই নম্বর নিয়ে বিভ্রাটের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। দেখা যায়, মেরিট লিস্টে ববিতা সরকারের মোট প্রাপ্ত নম্বর ৭৭, যার মধ্য়ে অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ববিতা সরকারের অ্য়াকাডেমিক স্কোর ৩১ হওয়ার কথা। সেখানে তাঁকে ৩৩ নম্বর দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
এই দু'নম্বর হেরফের হওয়ার জন্য মেধা তালিকায় অনেক পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে। ববিতা সরকারের বদলে উঠে আসতে পারে অন্য় কোনও দাবিদার চাকরিপ্রার্থীর নাম। তখনই ববিতা নন, তিনি চাকরির দাবিদার বলে এগিয়ে আসেন অনামিকা। মামলাও দায়ের করেন। অনামিকার বলেন, "২ নম্বর কমলে ১৪ জনের পিছনে চলে যাচ্ছেন ববিতা। ২১ নম্বরে আমার নাম রয়েছে। সেই নিরিখে চাকরিটি আমারই প্রাপ্য। সেটি কমিশনের ভুল নাকি প্রার্থীর, তার জন্য আমরা ভুগছি। বিষয়টি যেন ঝুলিয়ে রাখা না হয়।"
এর পর ববিতা বলেন, "মিলিয়ে দেখলাম, ২ নম্বর বেশি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আমার আইনজীবীকে জানাই আমি। কমিশন কেন করল, জানি না। বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। কারণ ২ নম্বর বেশি হলে আমার লড়াইটার বাস্তবতা থাকে না। আমার লড়াইটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বেনিয়মের বিরুদ্ধে। আমি চাকরির দাবি কিন্তু করিনি।" ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ববিতা। আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে, মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আমি ববিতাকে অভিনন্দন জানাই। অতিরিক্ত ২ নম্বর পেয়েছেন জেনে আদালতে গিয়েছেন তিনি। এই যে সততা দেখিয়েছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন আদালত বিচার করবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে যিনি চাকরি পাওয়ার যোগ্য হবেন, তাঁকেই দেবে।”
হাইকোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি চাকরি প্রার্থীদের নম্বরের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন
তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের প্রতিক্রিয়া চাইলে তিনি বলেন, "বিচারপতি বিচার করছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন। এ সবের উপর কিছু বলা যায় না। উনি যা মনে করেছেন, নির্দেশ দিয়েছেন।"