কলকাতা: সাদা খাতা জমা দিয়েও পরীক্ষায় উতরে যাওয়া থেকে অযোগ্যদের টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া, নিয়োগ দুর্নীতিতে (SSC Scam) একের পর এক অভিযোগ সামনে এসেছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) আমলেই নিয়োগে এমন দেদার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI)। তার জন্য় বেশ কয়েক মাস ধরে জেলে রয়েছেন পার্থ। বার বার জামিনের আর্জি জানালেও, খারিজ হয়ে গিয়েছে আদালতে। তৃণমূলও একদা দলের অলিখিত দু'নম্বর নেতার থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী হয়ে কী ভাবে দুর্নীতির আঁচ পেলেন না তিনি, নাকি নিজেও যুক্ত ছিলেন উঠছে প্রশ্ন। কিন্তু পার্থর আইনজীবী জানালেন, একজন মন্ত্রীর পক্ষে সবকিছু জানা সম্ভব নয়। 


পার্থর আইনজীবী জানালেন, একজন মন্ত্রীর পক্ষে সবকিছু জানা সম্ভব নয়


বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে ফের জামিনের আর্জি জানান পার্থর আইনজীবী। যথারীতি ভাবে তাতে আপত্তি জানায় সিবিআই। সেই নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে সওয়াল-জবাব চলে। সেখানেই পার্থকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তাঁর আইনজীবী। তিনি বলেন, "মন্ত্রীর পক্ষে সবকিছু জানা সম্ভব নয় কখনওই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। ফাঁসানো হয়েছে ওঁকে। সিবিআই-এর ওঁকে হেফাজতে নেওয়াটাও ষড়যন্ত্রেরই অংশ। দায় চাপানো হচ্ছে। যেহেতু তিনি ইনচার্জ, পুরো দায় ওঁর উপর পড়েছে।"


আরও পড়ুন: SSC Scam: ‘শতাব্দী না হলেও, বন্দে ভারত তো হতে পারেন’! সিবিআই তদন্তের ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন আদালতের


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ ছাড়াও, এ দিন আদালতে তোলা হয় এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, প্রাক্তন সচিব অশোককুমার সাহা, প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং  দুই মিডলম্যান প্রদীপ সিংহ এবং প্রসন্ন রায়কে। সেখানে ধৃতদের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই।


 এ দিন আদালতে সিবিআই জানায়, পার্থ সহ, প্রত্য়েকের বিরুদ্ধেই তদন্তে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। রিমান্ড কপিতে সিবিআই দাবি করেছে, অযোগ্য ব্য়ক্তিদের বেআইনিভাবে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। টাকার বিনিময়ে চাকরি দিতে এজেন্ট গিয়ে কথা বলতেন। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার কাজটি সারা হতো এই এজেন্টদের মাধ্যমে।


সিবিআই জানায়, পার্থ সহ, প্রত্য়েকের বিরুদ্ধেই তদন্তে নতুন তথ্য উঠে এসেছে


এই এজেন্টদের নাম কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না, কেন তদন্ত ধীর গতিতে চলছে, প্রশ্ন তোলেন বিচারক। শুধু তাই নয়, সিবিআই-এর উদ্দেশে বিচারক আরও বলেন, "প্রকাশ্যে নিয়ে আসুন এজেন্টদের। দূণ এক্সপ্রেস থেকে বন্দে ভারত না হলেও, শতাব্দী এক্সপ্রেস তো হতেই পারেন!" শেষনেশ যদিও জামিন মঞ্জুর হয়নি পার্থর। আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ফের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।