কলকাতা: পদ্মের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে জোড়াফুলে ভিড়েছেন আগেই। কিন্তু সাবেক দলের টানাপড়েন নিয়ে দিব্যি ধারাভাষ্য দিয়ে চলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। রাজ্য এবং জেলা কমিটিতে দলবদল নিয়ে যে ভাবে বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে, এ বার তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন বাবুল। কার্যত ঘোষণা করে দিলেন, “আরও পাঁচটা উইকেট গেল মনে হচ্ছে।”



শনিবার বিজেপি-র হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন দলের পাঁচ বিধায়ক। তা নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্য গেরুয়া শিবিরে। সেই নিয়েই নেটমাধ্যমে বাবুল লেখেন, ‘নিজ গুণে পরের পর উইকেট পড়ছে বিজেপি-র। আজ আরও পাঁচটা গেল মনে হচ্ছে। শিববাবু শুনলাম সব শুনে কৈলাসে গিয়েছেন। আসল বাঙালি কাঁকড়াদের খুঁজিয়ে পাইবার একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান-মুরলীধর লেন।’


রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে এই 'গৃহযুদ্ধ'-এর জন্য বাবুল আসলে শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়কেই(Kailash Vijayvargiya) নিশানা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য আগেও আঙুল উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। বাংলায় তাঁদের হাতে নির্বাচনী দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও। সরাসরি কারও নাম না নিলেও, তিনি বাকিদের মতো 'সুযোগসন্ধানী' নন বলে এর আগে মন্তব্য করেছিলেন বাবুল। এ বার বিজেপি-র অন্তর্দ্বন্দ্বের জন্য তিনি শিবপ্রকাশ এবং কৈলাসকের নিশানা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগেও, বিজেপি নেতৃত্বকে 'কাঁকড়া' বলে কটাক্ষ করেছিলেন বাবুল।


আরও পড়ুন: BJP: সায়ন্তনের পর আরও ‘বিদ্রোহ’, বিজেপি-র হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন একাধিক বিধায়ক


কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের পর বিজেপি-র রাজ্য কমিটিতে ব্যাপক রদবদল ঘটে। তাতে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়েন সায়ন্তন বসু। প্রকাশ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ না জানালেও, দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। শনিবার ফের তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। শনিবার এক সঙ্গে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন বিজেপি-র পাঁচ বিধায়ক, গাইঘাটার সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ উত্তরের অশোক কীর্তনীয়া, হরিণঘাটার অসীম সরকার, কল্যাণীর অম্বিকা রায় এবং রানাঘাট দক্ষিণের মুকুটমণি অধিকারী।


দল ছাড়ার কোনও কারণ যদিও ব্যক্ত করেননি কেউ, তবে রাজ্য কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব না থাকাতেই তাঁরা অসন্তুষ্ট বলে বিজেপি-র অন্দরে জল্পনা। সেই নিয়ে দলের তরফে মানভঞ্জনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু যে ভাবে একের পর এক নেতা-বিধায়ক বিদ্রোহ করতে শুরু করেছেন, তাতে বাংলায় দলের সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই।