ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: বাগুইআটিকাণ্ডে (Baguiati Twin Murder) নিহত ২ ছাত্রের মধ্যে অভিষেক নস্করের (Abhishek Naskar) আজই ছিল জন্মদিন। তাঁর বাবার পরিকল্পনা ছিল, জন্মদিনে বাড়ির সামনে আয়োজন করে ছেলের বন্ধুদের মাংসভাত খাওয়াবেন। কিন্তু তা আর হল না। হাহাকার ঝরে পড়ল নিহত ছাত্রের বাবার গলায়। এদিন অভিষেকের বাবা বলেন, "ওর অনেক বন্ধু আছে এখানে। যাদের সঙ্গে ও খেলে। ঠিক করেছিলাম ছেলে ফিরে এলে ওর জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধুদের ডেকে মাংস-ভাত খাওয়াব। ভেবেছিলাম আশপাশের লোকজনকে বলব। নিজেরাই রান্না করব ঠিক করেছিলাম।''
জোড়া খুনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন:সন্তানহারা পরিবারের এই যন্ত্রণার দায় কার? দুই কিশোরকে এই নির্মম পরিণতির শিকার হতে হল কেন? দু-দু’টো পরিবারকে এভাবে সন্তান হারাতে হল কেন? কী করছিল পুলিশ? বাগুইআটিকাণ্ডে এখন প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা! বাগুইআটি থেকে দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত সতেন্দ্র চৌধুরী। ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের দাবি, প্রায় ২ সপ্তাহ মর্গে ২ কিশোরের দেহ পড়ে থাকলেও, তাদের যে খুন করা হয়েছে তাই জানত না পুলিশ। সূত্রের খবর, এক অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরই পুলিশ জানতে পারে, ২ কিশোরকে খুন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ময়নাতদন্ত হয়ে গেলেও এখনও সেই রিপোর্ট হাতে পায়নি পুলিশ। সূত্রের খবর, ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে খুন করানো হয়েছে বাগুইআটির ২ কিশোরকে। খুনের আগে রাজারহাটে নিয়ে গিয়ে তাদের খাবার খাওয়ানো হয়। খাওয়ানো হয় চা। পুলিশ সূত্রে খবর, ভাড়াটে খুনিদের বলা হয়েছিল, একটা কাজ করতে হবে। তার জন্য দেওয়া হবে টাকা। পুলিশ সূত্রে খবর, ২২ অগাস্টই রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে গাড়িতে খুন করা হয় ২ কিশোরকে। গাড়িতে ২ কিশোর সহ ছিল ৬ জন। তবে ঘটনার পর থেকে ২ ছাত্রেরই মোবাইল ফোন উধাও।
পুলিশের বিরুদ্ধে এদিনও গাফিলতির অভিযোগ তোলেন মৃত ছাত্র অভিষেকের বাবা। তিনি বলেন, "পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই। পুলিশ কোনও কাজ করেনি। আমাদের সমবেদনা জানাচ্ছে। পুলিশ বলছে খুনি এলাকায় ঘুরছে। ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। আমার ঠিক ধরে নিয়ে আসব। মর্গে গিয়ে জানতে পারলাম অপহরণের পরের দিনই খুন করা হয়েছে। আর আমাকে ৫ তারিখে ছবি দেখাচ্ছে। এরা মিথ্যে কথা বলেছে।''
আরও পড়ুন : Baguiati Twin Murder: চা-খাবার খাইয়ে শ্বাসরোধ করে খুন, চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয় দুই ছাত্রের দেহ!