কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।  তা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য়। তার মধ্যেই বিস্ফোরক দাবি করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baishakhi Banerjee)। তাঁর দাবি, আগে পার্থর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু পার্থ অন্য যুক্তি দেখিয়েছিলেন তাঁকে। বৈশাখীর কথায়, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আগে অনেক বলেছি। উনি বলতেন, শিক্ষা দফতরটা হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে নয়, নাকতলা থেকে চলবে।’’


পার্থকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি বৈশাখীর


পার্থ যখন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বৈশাখী।  পার্থর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্যেই বৈশাখী ছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে এবিপি আনন্দে মুখ খুললেন বৈশাখী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই পার্থদা অচেনা। আমাকে বলেছিলেন, অর্থের জন্য রাজনীতি করবে না। আমার মতো সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েরা রাজীনীতিতে এলে চুরি কমবে বলেছিলেন। আমি পার্থদাকে বলেছিলাম, প্রত্যেক পদের জন্য প্রাইস ট্যাগ লাগাচ্ছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। উনি শোনেননি। উল্টে দুর্নীতি যাঁরা করেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করেছেন।’’


শোভন বেহালা পূর্বের প্রাক্তন বিধায়ক।  আর বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ। শোভের তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা যখন তুঙ্গে, সেই সময় গভীর রাতে তাঁর ফ্ল্যাটে গিয়ে, বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন পার্থ। সম্প্রতি শোভনের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনার মধ্যেও পার্থর বাড়িতে যান বৈশাখী। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতারির পর, সেই পার্থকে নিয়েই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন বৈশাখী।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: কেউ যদি দোষী হয়, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হোক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


বৈশাখীর কথায়, ‘‘পতনের পিছনে পার্থর অহংবোধ। বলতেন, আমি মমতার সিলমোহর নিয়ে কাজ করছি। মমতার পরই আমার স্থান। বার বার বলেছি, হয়ত বেপরোয়া হয়ে গিয়েছেন। চুরিকে প্রশ্রয় দেওয়াকে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত করেছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে, যে আমাকে এসএসসির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছিল একবার। তখন এই পার্থর সামনে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা বলেন, ওঁকে দেবেন না, আমাদের রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে।’’


বৈশাখীর বন্ধু শোভনও পার্থর সঙ্গে নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত। একবার সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন। আর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ। তবে দু’টি ঘটনাকে এক করে দেখতে রাজি নন বৈশাখী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি আর শোভন লুকিয়ে কিছু করিনি। আমাদের সম্পর্ক শুরু থেকেই স্বচ্ছ ছিল। এখন যেসব মহিলার নাম আসছে, সেসব অন্য সম্পর্ক। শোভনের টাকা নেওয়াটা ষড়যন্ত্র। এখানে প্রতিটি টাকা চোখের জল, হাহাকারে ভরা।’’


ঔদ্ধত্য এসেছিল পার্থর মধ্যে, দাবি বৈশাখীর


ক্ষমতায় থেকে পার্থর মধ্যে ঔদ্ধত্য এসে গিয়েছিল বলেও দাবি বৈশাখীর। তিনি বলেন, ‘‘শোভনকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই টাকা কোথায় যায়? দলে? শোভন বলেন, অসম্ভব।  দিদি কখনও বলবে না, চুরি কর। আমি বলেছিলাম, পার্থদাকে দুর্নীতি ঘনিয়ে আসছে। ক্ষমতার ঔদ্ধত্য।’’ পার্থর গ্রেফতারি ঘিরে রাজ্য রাজনীতি এখন সরগরম, তার মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করল শোভনের বান্ধবী বৈশাখী চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন।