পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : ব্যাঙ্কিং প্রতারণা, অনলাইন প্রতারণায় ঘটনায় আতঙ্কিত মানুষ। কোথায় কীভাবে ফাঁদ পাতে প্রতারকরা, অনেক সময় কুলকিনারাই করা যায় না। এসএমএস থেকে হোয়াটস অ্যাপ বার্তা, সবেতেই যেন প্রতারণার ফাঁদ। কাকে ভরসা করা যায়, কাকে যায় না, এটাই বুঝে উঠতে অপারগ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ভরসা রাখেন ব্যাঙ্কের অফিসারদের উপর, আশা রাখেন, তাঁরা অন্তত সঠিক রাস্তাই দেখাবেন। কিন্তু এ তো সর্ষের মধ্যেই ভূত ! আড়াই কোটি টাকা প্রতারণা-মামলায় এবার ওয়েস্ট বেঙ্গল সাইবার ক্রাইম উইংয়ের হাতে গ্রেফতার হলেন বন্ধন ব্যাঙ্কের ৫ কর্তা। ব্যাঙ্কে বসে প্রতারকদের কাছে মোটা টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের তথ্য পাচার করছিলেন এই পাঁচ উচ্চপদস্থ আধিকারিক। অভিযোগ এমনটাই।
ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসে গত জুলাই মাসে। গত ২৩ জুলাই বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে বন্ধন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে তাদের গ্রাহকদের হোয়াটসঅ্যাপ কল, SMS বা ফোন করে KYC অসম্পূর্ণ আছে বলে, আরও তথ্য জানতে চাওয়া হয়। গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করা হয় মোটা অঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট, জীবন বিমা বা অন্য বিমা পলিসির টোপ দিয়েও । এভাবেই অনেকের কাছ থেকে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে ব্যাঙ্কে । বন্ধন ব্যাঙ্কই জানায়, এভাবে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার প্রতারণা হয়ে গিয়েছে।
এরপর এই আড়াই কোটি টাকা প্রতারণা-মামলার তদন্ত শুরু করে ওয়েস্ট বেঙ্গল সাইবার ক্রাইম বিভাগ। তদন্তে নেমে সর্ষের মধ্যেই ভূত খুঁজে পায় তারা। জানা যায়, ব্যাঙ্কেরই বড়-বড় পদে কাজ করা ব্যক্তিরাই এর নেপথ্যে। তারাই প্রতারণার জাল বিছিয়েছেন। বাইরের প্রতারণা চক্রর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রাহকদের তথ্য হাতানোর কাজে লিপ্ত তারা। এরপর গ্রেফতার করা হয় বন্ধন ব্যাঙ্কের ৫ আধিকারিককে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে কেউ সেলস ম্যানেজার, কেউ আবার কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজারের পদে ছিলেন। ধৃতরা কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের তথ্যও পাচার করতেন বলে দাবি পুলিশের। তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় সাইবার সেল। তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ শাখার CRO, জামতাড়া শাখার CRO এবং সরাইদেহলা শাখার সেলস ম্যানেজার। গ্রেফতার করে ওয়েস্ট বেঙ্গল সাইবার ক্রাইম উইং। এছাড়া শুক্রবার কলকাতার মেটিয়াবুরুজ শাখার CRO ও সেলস ম্যানেজারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে ।