সমীরণ পাল, বনগাঁ:  দুর্নীতি মামলায় পর পর গ্রেফতার তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা। তাঁদের নামে থাকা নিত্য নতুন সম্পত্তির কথা উঠে আসছে গোয়েন্দা সূত্রে। সেই আবহেই বনগাঁ পৌরসভা উপনির্বাচনে (Bangaon Municipal Bypolls) সবুজ ঝড়ের দাপট অব্যাহত রইল (TMC)। বনগাঁ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী পাপাই রাহা। ২ হাজার ১১৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি।


নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এ দিন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই জয় উৎসর্গ করেন তৃণমূল প্রার্থী পাপাই এবং দলের সমর্থকেরা। দলের সমর্থকরা বলেন, "এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর জয়।'


বনগাঁ পৌরসভা উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল


বনগাঁ পৌরসভা উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি (BJP) প্রার্থী অরূপকুমার পাল। তিনি পেয়েছেন ৭২৪টি ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা সিপিএম প্রার্থী ধৃতিমান পাল পেয়েছেন ৩৩২টি ভোট। কংগ্রেস প্রার্থী প্রভাস পাল পেয়েছেন ৫২টি ভোট। 


বনগাঁর মহকুমা শাসকের দফতরের ইভিএমের ওয়্যারহাইসে গণনা হয়। পুরভোটের পরপরই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দিলীপ দাসের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হয়।  


গত রবিবার বনগাঁ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচন ঘিরে দফায় দফায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাধে। বহিরাগতদের এনে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। বনগাঁর বাটার মোড়ে বসে প্রায় সওয়া একঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান দুই বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া এবং স্বপন মজুমদার। যদিও তাঁরাই বহিরাগত এনে ঢোকাচ্ছেন বলে পাল্টা দাবি করেন পাপাই। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বহিরাগত চিহ্নিত করতেও দেখা যায় তাঁকে। 


আরও পড়ুন: WB By Election Result: আসানসোল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল


বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের বুথে বহিরাগতদের জমায়েত, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ঘিরেও ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বুথের বাইরে চোর চোর স্লোগান তোলেন বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাস্থলে হাজির তৃণমূল নেতাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পাল্টা বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের উপর হামলার চেষ্টা, বাঁচাতে গেলে বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষীদের মারধরের অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। এরপরই বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। বিজেপি সমর্থকদের দিকে তেড়ে যান তৃণমূল প্রার্থী পাপাই। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


 কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠেও উত্তেজনা ছড়ায়। বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার উপস্থিতিতে বুথের বাইরে বহিরাগতদের জমায়েতের অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের প্রার্থী পাপাই। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি বিধায়কও। এর পর তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিজেপি বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। বহিরাগতদের আনার অভিযোগ অস্বীকার করে গেরুয়া শিবির। 


ভোটের দিন দফায় দফায় ঝামেলা হয়


দফায় দফায় এমন ঝামেলার জেরে ভোটগ্রহণের দিন  অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যশোর রোড। পেট্রাপোল সীমান্তে যাওয়ার রাস্তায় তৈরি হয় যানজট। উপনির্বাচনে বুথ দখল করতে না পেরে বিজেপি নাটক করছে বলে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস।