ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা:  রোগীদের চিকিৎসা ও নিয়মিত চেকআপের জন্য কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে চালু হল ইনডোর ও আউটডোর ইউনিট। স্ট্রোক আক্রান্তদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিল বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স। জেলার মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্ট্রোক আক্রান্তদের অযথা রেফার নিয়ন্ত্রণ করলে, অনেক প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। মত স্বাস্থ্য অধিকর্তার।


রাজ্যে প্রতিবছর ১ লক্ষের মধ্যে ১৪৫ জন প্রথমবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের গবেষকদের পরিসংখ্যানে উঠে আসছে এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য। ফলে স্ট্রোকে আক্রান্তদের জন্য, আরও উন্নতমানের চিকিৎসাব্যবস্থার চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে, বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের উদ্যোগে, রোগীদের চিকিৎসা ও নিয়মিত চেকআপের জন্য কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোর চালু হল মঙ্গলবার। 


কলকাতায় বসেই টেলি মেডিসিন ও ভিডিও কলের মাধ্যমে, জেলায় স্ট্রোক আক্রান্তদের পরামর্শ দেবেন চিকিৎসকরা। এক কথায় যা, হাব অ্যান্ড স্পোক মডেল হিসেবে পরিচিত। 


স্ট্রোক অ্যান্ড নিউরোইন্টারভেনশন ইউনিটের ইনচার্জ বিমানকান্তি রায়ের কথায়, BIN-কে কেন্দ্র করে সমস্ত জেলায়, বিভিBangur Institute of Neuroscienceন্ন হাসপাতালকে কানেক্ট করা হচ্ছে হাব এবং স্পোক মডেলে। অর্থাৎ কেন্দ্রে একটি হাসপাতাল এবং গ্রামাঞ্চলের হাসপাতালগুলিকে অনলাইনে কানেক্ট করা হচ্ছে। যাতে জেলায় কোনও স্ট্রোক আক্রান্ত রোগী এলে, দ্রুত চিকিৎসা করা যায়। টেলি বা ভিডিও মেডিসিনের মাধ্যমে বাঙুর থেকে দেখে রোগীর প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়।


এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা। তাঁদের সামনেই জেলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলি থেকে, স্ট্রোক আক্রান্তদের অযথা রেফার করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। 


স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে, স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের জরুরি বিভাগে ঠিকমতো না দেখেই রেফার করে দেওয়া হয়। সেই বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তাহলে অনেক প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে।


স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের কথায়, কলকাতায় প্রচুর হাসপাতাল হয়েছে, কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করছে, মানুষের চাহিদা বাড়ছে। প্রভাব খাটিয়ে ক্যাচ লাগিয়ে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছে এবং সরকারও চেষ্টা করছে, যাতে এই চাহিদা অনুযায়ী পরিকাঠামো উন্নত করা যায়।


বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের গবেষকদের পরিসংখ্যান আরও বলছে, ১ লক্ষ রাজ্যবাসীর মধ্যে, অন্তত ৫৪৫ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। স্ট্রোক হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়, সেই হার ৩৩ শতাংশ। ৩ মাসের মধ্যে মৃত্যুর হার ৪২ শতাংশ। ৫ বছরের মধ্যে মৃত্যু হয়, সেই হার ৫৯ শতাংশ এবং ৭ বছরের মধ্যে মারা যাওয়ার হার ৬১ শতাংশ। বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের নতুন উদ্যোগে খুশি রোগীরা।