তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: সূর্যের আলো ঠিকভাবে ফোটার আগেই চলে গেল তরতাজা তিনটি প্রাণ। ফের পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হল তিনজনকে। বাঁকুড়ায় (Bankura) পৃথক দুটি পথ দুর্ঘটনা (Road Accident)। আর তাতেই মৃত্যু হল তিনজনের। দুর্ঘটনা দুটি ঘটে জয়পুর জঙ্গলে (Jaipur Forest) ও বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) তেলিপুকুর এলাকায়। পুলিশ মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে আজ ভোরে কোতুলপুর থেকে বিষ্ণুপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি ডাম্পার। প্রবল গতিতে যাচ্ছিল সেটি রাস্তা দিয়ে। ডাম্পারটি বন কামারপুকুর ও তেলিপুকুরের মাঝে ভাঙ্গা পুলের কাছে আসতেই উল্টো দিক থেকে আসা একটি ডিজায়ার গাড়ি মুখোমুখি সজোরে ধাক্কা মারে ডাম্পারটিকে। ঘটনার অভিঘাতে ডিজায়ার গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ডিজায়ার গাড়ির চালক সহ দুই যাত্রীর। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ি গ্যাস কার্টার দিয়ে কেটে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গতকাল রাতে। জয়পুর জঙ্গলে একটি ইঞ্জিন ভ্যানের সাথে একটি বাইকের মুখোমুখি ধাক্কা হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক বাইক আরোহীর। ঘটনায় আহত হন আরও তিনজন। দুটি পথ দুর্ঘটনায় তিন জনের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
গতকাল এমনই একটি দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছিল। দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছতে গতি বাড়িয়ে ছুটে চলতে গিয়ে বিপত্তি পূর্ব বর্ধমানে। মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance Accident)। ভাতারে বেপরোয়া গতিতে অ্যাম্বুল্যান্সটি ধাক্কা মারে একটি বাইকে ও একটি সাইকেলে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে ঘটনাস্থলেই ৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন পাঁচজন। জানা যাচ্ছে, অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা রোগী অনন্ত লেট (৭০)। বাইক আরোহী আবদুল রহিম (৩০) ও সাইকেল আরোহী তাপস ঘোষের (২৬) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ঘটনা ভাতারের নতুনগ্রাম এলাকায়।
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার রামপুরহাট থেকে রেফার হওয়া রোগীকে নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের দিকে ছুটে যাচ্ছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি। যথেষ্ট গতিতেই বোলপুরের ২ বি জাতীয় সড়কে ভাতারের নতুনগ্রাম এলাকা দিয়ে সেটি যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। তীব্র গতিতে এসে অ্যাম্বুল্যান্সটি প্রথমে একটি বাইকে ও তারপর একটি সাইকেলে ধাক্কা মারে। জোড়া ধাক্কার অভিঘাতে রাস্তাতেই উল্টে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। দুর্ঘটনা দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় মানুষরা। তাঁরাই আহতদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য পাঠান। যেখানে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা রোগী ও বাইক আরোহী এবং সাইকেল আরোহীটিকে। দুর্ঘটনায় আরও ৫ জন আহত হন। দুর্ঘটনার পরে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। বেশ কিছুক্ষণের জন্য যানজটেরও তৈরি হয়। স্থানীয়রা দুর্ঘটনা কমাতে স্পিড ব্রেকার লাগানোর দাবিও তোলেন।