তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া : বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) মল্ল রাজাদের আমলে খনন করা হয়েছিল। ঐতিহ্যবাহী কালিন্দী বাঁধ (Kalindi Dam) ভরাটের অভিযোগে নড়েচড়ে বসল ভূমি সংস্কার দফতর (Land Reforms Department)। এই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে নামলেন দফতরের আধিকারিকরা। এদিকে ঐতিহ্যবাহী বাঁধ ভরাটের ঘটনা ঘিরে উত্তাল রাজনৈতিক মহলও। বিজেপির দাবি, এর পিছনে মদত রয়েছে তৃণমূলের। অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের।
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর একসময় ছিল মল্ল রাজাদের রাজধানী। মল্লগড় বিষ্ণুপুরে জল সঙ্কট মেটানো ও সেচের ব্যবস্থা করার উদ্দেশে বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন প্রান্তে লালবাঁধ, যমুনাবাঁধ, কালিন্দী বাঁধসহ মোট সাতটি বাঁধ খনন করা হয়। পরবর্তীতে সংস্কারের অভাবে ও সরকারি টালবাহানায় অধিকাংশ বাঁধ এখন পড়েছে অস্তিত্ব-সঙ্কটে। বহু ক্ষেত্রে বাঁধের জায়গা ভরাট করে সেখানে গড়ে উঠেছে বসতি। এবার কালিন্দী বাঁধের একাংশ মাটি দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ উঠল ওই বাঁধের মাছ চাষিদের বিরুদ্ধেই। সম্প্রতি এই বাঁধ ভরাটের লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে ভূমি সংস্কার দফতরে। অভিযোগ জমা পড়তেই বাঁধ ভরাট বন্ধের নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি দফতরের একটি তদন্তকারী দল ঘটনাস্থলে সরেজমিনে তদন্তে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেআইনিভাবে কালিন্দী বাঁধের একাংশ শালের বল্লা ও ড্রাম দিয়ে ঘিরে ট্রাক্টরের পর ট্রাক্টর মাটি ফেলে ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ঐতিহ্যবাহী ওই বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
অভিযুক্ত মাছ চাষি সজল মুখোপাধ্যায় কালিন্দী বাঁধের একাংশ ভরাটের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর দাবি, মাছ চাষের সুবিধার জন্য এবং পরবর্তীতে বোটিং ও ভাসমান হোটেল নির্মাণের উদ্দেশেই ওই অংশ ভরাট করা হচ্ছিল।
ভূমি সংস্কার দফতরের দাবি, সরেজমিনে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভরাটের প্রমাণ মিললে পরবর্তীকালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
এদিকে দিঘি ভরাটের অভিযোগ সামনে আসতেই বিষ্ণুপুর শহর জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, তৃণমূল নেতাদের মদতেই এভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। এর প্রতিবাদে শহর জুড়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিজেপি।
তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবে যুক্ত নয়। এই অন্যায়কে কোনওভাবে মেনে নেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই ভূমি সংস্কার দফতর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করেছে।
আরও পড়ুন ; লেটার প্যাডে চাঁদা নিতেই কাঠগড়ায় বিজেপি নেতা, শোকজ করে ৭ দিনের সময় দিল দল