প্রসেনজিৎ সাহা ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, ত্রিপুরা ও কলকাতা: দোরগোড়ায় ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ঘর গোছাচ্ছে সব পক্ষ। এই পরিস্থিতিতে দূরত্ব ভুলে কাছাকাছি এসেছে ত্রিপুরায় এক কালে রাজনৈতিক শাসক-বিরোধী সিপিএম ও কংগ্রেস। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে আসন্ন নির্বাচনে সিপিএম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতার বিষয়টি। এই অবহেই কোন পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতায় যেতে হচ্ছে, তা নিয়ে কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ব্যাখ্যা দেন সীতারাম ইয়েচুরি। আসন সমঝোতা নিয়ে সমস্যা মেটাতে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায়। সেখানে ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। ১৩টি আসন কংগ্রেস এবং ১টি আসন নির্দলের জন্য ছেড়ে রেখে বাকিগুলিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। পরে শনিবার প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। তারা ১৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তাহলে কি কিছু আসনে সিপিএম ও কংগ্রেসের বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে? বাংলাতেও নির্বাচনে এমন ছবি দেখা গিয়েছিল। আর ত্রিপুরাতেও এখন যা পরিস্থিতি, সেটাই যদি থেকে যায় তাহলে এখানে চারটি আসনে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও, কংগ্রেস নেতৃত্ব এখনই আশা ছাড়তে নারাজ। ত্রিপুরার বিধায়ক ও কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন বলেন, 'আশা করি এই আসনগুলিতে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নেবে সিপিএম।' সূত্রের দাবি, আসন সমঝোতা নিয়ে সমস্যা মেটাতে কংগ্রেসের হাইকমান্ডের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন ইয়েচুরি। সূত্রের দাবি, কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, 'বিজেপি-তৃণমূল হাত ধরাধরি করে ফের ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছে। সেই কারণেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ লড়াই ছাড়া অন্য কোনও পথ ছিল না।' শুক্রবার, সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন, বিধায়ক মবস্বর আলি। তাঁর পুরনো কেন্দ্র কৈলাসহর থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত, ত্রিপুরার ৫৯টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি ও তাঁর শরিক দলগুলো।
বিজেপির ক্ষোভ:
প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ জমেছে বিজেপির অন্দরে। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায়, চণ্ডীপুরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। পার্টি অফিসের বাইরে দলীয় পতাকা ও ফেস্টুন ছিঁড়ে, তাতে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। এখানেই বিজেপির প্রার্থী করা হয়েছে, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক টিঙ্কু রায়কে। তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দলীয় কর্মীদের একাংশ। বাগবাসাতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া দলীয় পতাকা ও ফেস্টুনে আর, কদমতলাকূর্তিতে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে দেওয়া হয় স্লোগান।
এ দিন ফের ত্রিপুরার ভোট নিয়ে বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, 'আমার বলতে দ্বিধা নেই যে, জাতীয় স্তরে তৃণমূল দলের বিস্তৃতি দেরিতে শুরু হয়েছে। আমাদের বুকে আগুন রয়েছে। ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের ভোটের ফল আপনারা আগে দেখেছেন। আমরা গোয়ায় ৮ শতাংশে পৌঁছেছি, কিন্তু, বাংলায় কংগ্রেস-বিজেপির সেখানে পৌঁছতে কদিন লেগেছে, সেটাও আপনারা দেখছেন।'
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শুভেন্দুর নিশানায়, পাল্টা তোপ অভিষেকের