তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হতেই চাপের মুখে টাকা ফেরত দেন ওই ব্যাঙ্ক কর্মী। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তরফে ওই কর্মীর কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সোনামুখীর পর এবার বিষ্ণুপুর। ফের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ায়। যা নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল বিষ্ণুপুরে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শাখায়। কলুপুকুর মনসামাতা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি, বছরখানেক আগে ব্যাঙ্ক থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া হয়। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঋণ শোধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরপরেও কিস্তির ১৭ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে বলে তাগাদা দিচ্ছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। হিসেব মেলানোর পর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মীর ওপর। ব্যাঙ্কে গিয়ে ওই কর্মীকে চেপে ধরতেই ফাঁস হয় টাকা গায়েবের রহস্য। বিষ্ণুপুরের ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা সরমা পাত্র বলেন, 'ব্যাঙ্ক বলছে আরও টাকা পাওনা আছে। রসিদে দেখছি অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল। সেলিমের অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকাটা ঢুকেছে।' চাপের মুখে টাকা ফেরত দেন অভিযুক্ত। অভিযুক্ত অস্থায়ী ব্যাঙ্ক কর্মী সেলিমউদ্দিন বায়েনের দাবি, 'আমার কাছে ছিল। ধরুন আপনি দিয়ে গেছেন। প্রচুর কাস্টমার থাকে। আপনি ডিমান্ড করলে ভুলটা হত না। আমার কাছে ক্যাশটা রয়ে গেছিল।' অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী। অভিযোগ পেয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার মুকেশ কুমার কুমার বলেন, 'কমপ্লেন হয়েছে। স্টেপ নিয়েছি। উনি টেম্পোরারি স্টাফ, ব্রাঞ্চের আউট সাইড করে দিয়েছি।'
যদিও এই ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এর আগে বিষ্ণুপুরের মানিকবাজারে ৯১টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, ওই গোষ্ঠীর ক্য়াশিয়ার-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
মহিলাদের আর্থসামাজিক ভাবে উন্নয়নের জন্য তৈরি হয় স্বনির্ভর গোষ্ঠী। বাংলায় এমন গোষ্ঠীর সংখ্যা বহু। রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাজ বহু ক্ষেত্রেই আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে। গ্রামীন অর্থনীতি শক্তিশালী করতেও এদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ব্যাঙ্ক থেকে সহজে ঋণ পেয়ে থাকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। নিয়ম মেনে কিস্তিও মেটায় অধিকাংশ গোষ্ঠী। বিষ্ণুপুরের এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীও তাই করেছিল। কিন্তু ওই অস্থায়ী কর্মী টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা না দেওয়ায় কিস্তি মেটেনি গোষ্ঠীটির। এর জেরে নতুন করে ঋণ নিতেও সমস্যায় পড়তে হতে পারে তাদের।
আরও পড়ুন: ভিটামিন সি-তে ভরপুর লিচু, ভাল রাখে লিভার, সমাধান করে আরও অনেক সমস্যার