পূর্ণেন্দু সিংহ, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী: জেনারেটর বন্ধ করে বিধায়ক! বেলুন ফোলানো নেতা! নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন কলকাতা পুলিশের কর্তা শান্তনু সিংহ বিশ্বাস! ভাইরাল হয়েছে বাঁকুড়ার সভার ভিডিও। যেখানে ওই পুলিশ কর্তাকে, মুখ্যমন্ত্রীকে মা বলে সম্বোধন করতেও শোনা যায়। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তবে এই নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।


পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির আহ্বায়ক শান্তনু সিংহ বিশ্বাসকে বলতে শোনা যায়, 'একজন বেলুন ফোলানো নেতা আছে, এখন চুপসে গেছে।  জেনারেটর বন্ধ করে MLA হয়েছে। তার নামটা করে আমি নিজেকে ছোট করতে চাই না।


নাম করলেন না, কিন্তু, ইঙ্গিত স্পষ্ট। রবিবার বাঁকুড়ায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি সভা ছিল। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন শান্তনু সিংহ বিশ্বাস। যিনি কালীঘাটের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ থানার ওসি। কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। আবার পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির আহ্বায়কও। সেই তাঁরই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। 


এই ভাইরাল ভিডিওতে কলকাতা পুলিশের এই উচ্চ পদস্থ অফিসার মুখ্যমন্ত্রীকে মা বলে সম্বোধন করছেন। তিনি বলেন, সিভিক ভলান্টিয়ার ভাইদের আমি বলছি, এমন কোনও কাজ করবেন না, যাতে আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, যিনি আপনাদের মা, আমাদের মা, তাঁর মাথা নীচু হয়ে যায়। সেরকম কাজ করবেন না, আগামী দিনে ২০২৪-এ আমাদের যিনি নয়নের মণি, আমাদের যিনি চোখের মণি, তাঁকে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেব। যিনি আমাদের অভিভাবিকা, আগামী দিনে তিনিই হবেন ভারতবর্ষের কাণ্ডারী।


রবিবার বাঁকুড়া পুলিশ লাইনে ওয়েলফেয়ার কমিটির দ্বিতীয় সাধারণ সভায় শান্তনু সিংহ বিশ্বাসের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে দেখা গেছে, তৃণমূলের ৪ বিধায়ক ও জেলা পুলিশ সুপারকে।


ভাইরাল ভিডিওতে যেমন মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করছেন কলকাতা পুলিশের এই পদস্থ অফিসার, তেমনই বিরোধী দলের নেতাকেও, নাম না করে কটাক্ষ করছেন। 


এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, 'উনি কালীঘাটে মমতার বাড়ি চাকর, বাজার করেন, নিকৃষ্টমানের কথার জবাব আমি দেব না।'


চাকদার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের কথায়, একজন বিরোধী দলনেতা সম্পর্কে কোন অধিকারে একজন পুলিশ অফিসার এই ধরনের মন্তব্য করার সাহস পায়? বিরোধী দলনেতা পদটি ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতুল। সেই পদকে এভাবে অবমাননা করা যায়? যেভাবে প্রকাশ্যে বলছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কী কী করবে, সে তো বোঝাই যাচ্ছে।


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, কোনও সংগঠনের সভায়, সংগঠনের কোনও প্রতিনিধি হিসেবে মূল্যায়ন দিয়ে থাকেন, তাহলে পুলিশ ম্যানুয়েলে যা যা করা উচিত, তার মধ্যে কিন্তু এটা পড়তে পারে না, যদি উনি কাউকে বলে থাকেন লোডশেডিংয়ে জেতা বিধায়ক, বা কারও সম্পর্কে নেত্রীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন, উনি যে অ্যাসোসিয়েশন করছেন, সেই অ্যাসোসিয়েশন যে নীতিতে বিশ্বাস করে, তারওপর বক্তব্য রেখেছেন।


শান্তনু সিংহ বিশ্বাস কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে ওই মন্তব্য করেননি। কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানও ছিল না। পুলিশের স্বার্থ যাতে সুরক্ষিত থাকে, কেউ যাতে পুলিশের ক্ষতি না করতে পারে, তার প্রেক্ষিতেই উনি একথা বলেছেন। ভাইরাল ভিডিও’র সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।