প্রসূন চক্রবর্তী, হরিণচরণডাঙা: ৪৮ ঘণ্টাও কাটল না, ফের হাতির হানায় মৃত্যু বাঁকুড়ায়। এবার হাতির সামনে পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক তরুণী। পর পর এলাকার দুই বাসিন্দার মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে বন দফতরের ভূমিকায়। নজরদারি এড়িয়ে বার বার লোকালয়ে কী করে ঢুকে পড়ছে হাতির দল, প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। বন দফতরের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ তাঁরা। (Elephant Attack)
বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের হরিণচরণডাঙায় এবার হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে উঠে, শৌচালয়ের জন্য বাড়ির বাইরে বেরোন ২৪ বছরের মামণি ঘড়ুই। সেই সময় চারটি দাঁতাল বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। ওই হাতির দলের সামনে পড়ে যান মামণি। কিছু বুঝে ওঠার আগই তাঁকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে তুলে মাটিতে আছাড় মারে একটি হাতি। এর পর তাঁর দেহটি বেশ খানিক দূর টেনেও নিয়ে যায় ওই হাতিটি। (Bankura News)
চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন বাইরে বেরিয়ে আসেন। চারিদিকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হলে, ভয় পেয়ে পালিয়ে যায় হাতির দল। আহত অবস্থায় এর পর মামণিকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু সেখানে মামণিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পর পর হাতির হামলায় এমন মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায়, ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। এলাকা থেকে দ্রুত হাতির দলকে সরানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
এর আগে, মঙ্গলবার বড়জোড়াতেই হাতির হামলায় মারা যান এক বৃদ্ধ। গোপবান্দি এলাকার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধি, শম্ভুনাথ মণ্ডল সকালে বাড়ির সামনেই হাতির হামলার শিকার হন। ঘুম থেকে উঠে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় দু'টি হাতির সামনে পড়ে যান শম্ভুনাথ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটি হাতি শুঁড়ে পাকিয়ে শূন্যে তুলে ধরে তাঁকে। তার পর সজোরে আছাড় মারে মাটিতে। তার পর পা দিয়ে পিষেও দেয়, তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শম্ভুনাথের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বড়জোড়া লাগোয়া জঙ্গল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে হাতির দল রয়েছে। মাঝে মধ্যেই দলছুট হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে তারা। তার পর চলে তাণ্ডব। প্রায়শই এমন ঘটনায় তটস্থ স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, জঙ্গলে থাকা হাতির দল বনকর্মীদের নজরদারির ঘেরাটোপে থাকে। তার পরও মাঝে মধ্যেই দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে এবং দাপিয়ে বেড়ায়। বার বার এমন ঘটনা ঘটলেও বন দফতরের তরফে তেমন তৎপরতা নেই বলে দাবি তাঁদের।