তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: মল্লগড়ে রথের রশিতে পড়লো টান। ইতিহাস বলে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে প্রাচীন রথ উৎসব প্রায় ৩৫০ বছরের বেশি প্রাচীন। ১৬৬৫ খ্রীঃ বিষ্ণুপুরের মল্লরাজা শহরের মাধবগঞ্জে রানি শিরোমণি দেবীর ইচ্ছা অনুযায়ী পাথরের পাঁচ চূড়া মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরের বিগ্রহ রাধা মদন গোপাল জিউ। 


এই মন্দিরের অনুকরণের তৈরি করা হয় পিতলের রথ। মল্লরাজাদের সময় থেকেই এই রথ উৎসবের সূচনা হয়। বর্তমানে এই উৎসব পরিচালনা করেন মাধবগঞ্জ ১১ পাড়া রথ উৎসব কমিটি। সকাল থেকে রথের মধ্যে চলে পুজো-অর্চনা ও আরতি। এরপর শুরু হয় রথের রশিতে টান দেওয়ার পর্ব। দূরদূরান্ত থেকে আসা বহু মানুষ এসে উপস্থিত হয় রথের দড়িতে টান দেওয়া ও পুণ্য অর্জনের জন্য। 


এখানে পুজো অর্চনা ও আরতি নানান মাঙ্গলিক ক্রিয়া কর্ম পালনের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় ঐতিহ্যের রথ উৎসব। এই রথের বিশেষত্ব এখানকার রথে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা সওয়ার হন না। রথে সওয়ার হন রাধা মদন গোপাল জিউ।


অন্যদিকে, রথযাত্রা উপলক্ষ্যে হুগলির মাহেশে লোকারণ্য। এবার ৬২৮ বছরে পড়ল এই রথযাত্রা। আগে ছিল কাঠের রথ। লোহার রথ তৈরি হয় ১৩৬ বছর আগে। ১২৫ টন ওজনের এই রথের উচ্চতা ৫০ ফুট। পুরীতে কয়েক বছর অন্তর জগন্নাথের নবকলেবর হয়। কিন্তু মাহেশে ৬২৮ বছর ধরে একই বিগ্রহের পুজো হচ্ছে। 


আরও পড়ুন, 'জয় জগন্নাথ ধ্বনি', বিরল যোগে জগন্নাথদেবের দর্শন পেতে রেকর্ড ভিড়


পাশাপাশি রথের দিনে পুরনো চেহারায় পুরী। সৈকত শহরে উপচে পড়ছে ভিড়। মুহুর্মুহু শোনা যাচ্ছে জয় জগন্নাথ ধ্বনি। একবার রথের রশিতে টান দিতে কাতারে কাতারে পুণ্যার্থী জগন্নাথ ধামে এসেছেন। এই প্রথম নবযৌবন বেশ, নেত্র উৎসব, রথযাত্রা সব একই দিনে হচ্ছে।ফলে রথের রশিতে টান পড়বে আজ বিকেলে। প্রথমে বেরোবেন সুদর্শন। গর্ভগৃহ থেকে ২২ ধাপে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে নামিয়ে আনা হবে। ২২ ধাপের তৃতীয় ধাপে শিবের দর্শন নেন জগন্নাথ। এরপর দুলিয়ে দুলিয়ে বাজনা বাজিয়ে বিগ্রহকে তোলা হবে রথে, যা পহন্ডি নামে পরিচিত। জগন্নাথদেবের রথের নাম নন্দীঘোষ, বলরামের তালধ্বজ আর সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন বা পদ্মধ্বজ। এরপর পুরীর রাজা সোনার ঝাঁটা দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দেবেন। এই রীতিকে বলা হয় ছেড়াপহরা। আগামীকাল শেষ হবে রথযাত্রা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে