পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : দু'টি হাতির মৃত্যুর পর কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। তার পরেও ধরা পড়েনি অভিযুক্তরা। এর প্রতিবাদে এবার ময়দানে নামল বিজেপি। বাঁকুড়া বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভ অবস্থান করে গেরুয়া শিবির। অবিলম্বে এই ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানায় তারা। অন্যথা আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। 


গত ৭ মার্চ বাঁকুড়ার পিড়রাগোড়া গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় একটি পূর্ণবয়স্ক দাঁতাল হাতির। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একটি হাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ১২ মার্চ চুয়াগাড়া এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় দ্বিতীয় হাতিটির। এদিকে পরপর এই হাতি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনার তদন্তে নেমে বন দফতর একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন ও প্রাণীর বিরুদ্ধে নির্মমতা আইনে মামলা রুজু করে।


এদিকে দ্বিতীয় হাতিটির মৃত্যুর পর গ্রামবাসী অভিযোগ জানিয়েছিল, জঙ্গলে খাবারের পরিমাণ কমে এসেছে। জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে লোকালয়ে বা চাষের জমিতে এসে ঢুকছে হাতি। ফসল নষ্ট করছে। 


স্থানীয় চাষিদের একাংশ দাবি জানায়, প্রায়শই ফসল নষ্ট হওয়ায় কয়েকজন বাধ্য হয়ে চাষের জমি বিদ্যুৎবাহী তার দিয়ে ঘিরে রাখছে। সেই কারণেই এমন ঘটনা কি না সেই প্রশ্ন ওঠে।


এদিকে হাতি-মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তরা এখনও ধরা পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন শুরু করে বিজেপি। বিজেপির দাবি, রাজ্যের শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাদের অঙ্গুলিহেলনে গ্রেফতার হচ্ছে না অভিযুক্তরা। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে আজ বেলিয়াতোড় রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। দ্রুত অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে আরও বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন। 


যদিও তৃণমূলের দাবি, হাতি ও মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে উভয়ের মধ্যে সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ার পিছনে শাসকদলের কোনও হাত নেই। আইন আইনের পথেই চলবে। 


এদিকে বন দফতর জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।