কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, বাঁকুড়া : বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের (Physics Professor) বেতন ক্লাস পিছু ৩০০ টাকা ! ঝাড়ুদারের বেতন মাসে ৫০০০ টাকা। অর্থাৎ, অধ্যাপকের বেতন ঝাড়ুদারের থেকেও কম ! বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Bankura University) আবেদনে রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। ঘটনাকে উল্লেখ করে ট্যুইট বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। যদিও এনিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাটা কী ?
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় একটা আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তারা পদার্থবিদ্যায় বিশেষ লেকচারার পদে নিয়োগ করতে চান। তাতে ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হয়েছে, পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর, সঙ্গে নেট কিংবা পিএইচডি। অর্থাৎ সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা এখানে ধরা হয়েছে। এখানে বেতন বলা হয়েছে, ক্লাসপিছু ৩০০ টাকা। ৩০০ টাকার বিনিময়ে একজন নেট কিংবা পিএইচডি পদার্থবিদ্যার স্নাতকোত্তর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসে পড়াতে যাবেন। এই সিদ্ধান্তে হইচই পড়ে গেছে। অনেকে বলছেন, যেখানে ইউজিসি বলছে ক্লাসপিছু দেড় হাজার টাকা করে দিতে হবে, সেখানে ক্লাসপিছু কেন একজন অধ্যাপকের ৩০০ টাকা করে বেতন হবে ? সপ্তাহে তিনি সর্বোচ্চ চারটি করে ক্লাস নিতে পারবেন। অর্থাৎ যোগ্যতার ভিত্তিতে যিনি চাকরি পাবেন, সবকিছু ধরলে তিনি মাসে ৪৮০০ টাকা বেতন পাবেন।
এই বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়-ই কয়েকদিন আগে অস্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক ঝাড়ুদারের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তাঁর বেতন হচ্ছে- মাসে ৫ হাজার টাকা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাড়ুদারের বেতন একজন অধ্যাপকের থেকেও বেশি হবে ? অধ্যাপকের বেতন ঝাড়ুদারের থেকেও কম হবে ? গোটা বিষয়টি রাজ্যে শোরগোল পড়ে গেছে।
যত কাণ্ড সব বাঁকুড়া জেলাতেই। এই জেলাতেই বাঁকুড়া পুলিশের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। সেখানে প্রাথমিক স্কুলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। প্রবল বিতর্কের মুখে শেষমেশ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিল রাজ্য সরকার। সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল। তারপর সেই বাঁকুড়া জেলাতেই বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যেখানে নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক ঘটনা উঠে আসছে প্রতিদিন, সেখানে অধ্যাপনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত হতে চলেছেন, তাঁদের বেতন হবে দৈনিক ৩০০ টাকা ?
এনিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপও চড়েছে। সুকান্ত মজুমদার এনিয়ে ট্যুইটারে সরব হয়েছেন।
আরও পড়ুন ; সিভিক ভলান্টিয়ার স্কুলে পড়াবে! নিন্দার মুখে স্থগিত, প্রত্যাহার নয় কেন সিদ্ধান্ত, প্রশ্ন বিশিষ্টদের