তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: হাতির আক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকের নিয়ে সমন্বয় বৈঠক করল বন দফতর। রবিবার পাঞ্চেত ডিভিশনে এই বৈঠকে বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অনুপ কুমার দত্ত, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গণেশ বিশ্বাস, বন দফতরের রাজ্য ওয়াইল্ড লাইফের চিফ ওয়ার্ডেন দেবল রায় প্রমুখ।


বাঁকুড়া সহ দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলার একটা বড় অংশের মানুষের অন্যতম মাথা ব্যথার কারণ প্রায় সারা বছর ধরে দলমার দামালদের উপস্থিতি। ফলে চাষাবাদে ক্ষতি, সম্পত্তি হানির পাশাপাশি প্রাণ হানির মতো ঘটনা ঘটে। ফলে জনমানসে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। একে সরকারী ক্ষতিপূরণ পেতে দেরী, অন্যদিকে তা পর্যাপ্ত নয়, এই দুই বিষয়েও বনদপ্তরের কাজে অসন্তুষ্ট ক্ষতিগ্রস্তেরা। হাতির আক্রমণ রোধের পাশাপাশি দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে এই সমন্বয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।


বল দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে বাঁকুড়া জেলায় ৮০ টি হাতি অবস্থান করছে। পাশাপাশি দক্ষিণ বঙ্গের তিন জেলায় সেই সংখ্যাটা ১৬০ টি। বন দফতরের রাজ্য ওয়াইল্ড লাইফের চিফ ওয়ার্ডেন দেবল রায় বলেন, ''দক্ষিণ বঙ্গে তিনটি জেলার ছ'টি ডিভিশনে হাতি গুলি সাধারণত থাকে। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন ডিভিশনের মধ্যে সমন্বয় বৈঠক করা হয়। হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে দ্রুততার সঙ্গে ক্ষতিপূরণ পান ও একই জায়গায় যাতে বেশী দিন হাতি গুলি না থাকে তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হাতি গুলি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ হবে। একই সঙ্গে হেক্টর প্রতি ১৫ হাজার টাকা হিসেবে এখনো পর্যন্ত বিগত আট মাসে তিন জেলায় অনুমানিক ৫ কোটির মতো ক্ষতিপূরণ দেওয়া বাকি রয়েছে বলে তিনি জানান।


এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নয়াবসত রেঞ্জে  ছয় থেকে সাতটি গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পঞ্চাশ থেকে ষাটটি হাতির দল। ঘাগরা দতাল মেটলা নলবনা এলাকার চাষিদের অভিযোগ একদিকে যেমন নিম্নচাপের ফলে প্রতিদিনই বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে পাঁচ থেকে ছয় দিন ধরে হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষের ধান ও সবজি। চাষিরা বলেন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি এমনকী ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণও পায়নি কোনওদিন।