তুহিন অধিকারী, পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : বিষ্ণুপুর পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতিকাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। এত টাকা কোথা থেকে কী কারণে জমা পড়েছে, প্রাক্তন বিধায়কের কাছে তা জানতে চাইবেন তদন্তকারীরা।

পাশাপাশি, একাধিক আয় বহির্ভূত সম্পত্তি, পেট্রোল পাম্পের হদিশ মিলেছে। এনিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছেলে ও আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। হিসাব বহির্ভূত অর্থ মেলায় ইতিমধ্যেই প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের ৬টা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। কয়েকটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টেরও হদিশ মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। গত ২২ অগাস্ট,  ১০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বিষ্ণুপুর পুরসভার দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিধায়ক হন।একাধিক দফতরের মন্ত্রীও ছিলেন। ওই সময় তাঁর নাম জড়ায় সারদা দুর্নীতিতে। 

বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন বিধায়ক। বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানও ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে পুরসভার টেন্ডার সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। তার ভিত্তিতেই প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ৪০৬, ৪০৯ এবং ৪২০ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। 

গত ২৫ অগাস্ট বিষ্ণুপুর পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতিকাণ্ডে আরও একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  দাবি, প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে জেরা করে দিলীপ গড়াইয়ের নাম উঠে আসে। থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন ওভারশিয়ারকে। বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৮-র নভেম্বরে ওভারসিয়ারের পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন ধৃত দিলীপ গড়াই। তারপরও পুরসভার অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি বা OSD-র দায়িত্বে ছিলেন। 
টেন্ডার-দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর কী ভূমিকা ছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক। সামনেই পুরভোট, তৃণমূলের পায়ের তলায় জমি নেই তাই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে ফাঁসানো হয়েছে, প্রতিক্রিয়া বিজেপির। আইন আইনের পথে চলবে, পাল্টা দাবি তৃণমূলের।