কলকাতা : আবার শিল্পীমহলে শোকের খবর।  প্রয়াত বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষ। গত কয়েকদিন ধরে ভর্তি ছিলেন আরএন টেগোর হাসপাতালে। বেশ কিছুদিন ধরে ভুগছিলেন গৌরী ঘোষ। বেশ কয়েকদিন আগে তাঁর স্ট্রোক হয়েছিল । তারপর থেকেই অসুস্থ ছিলেন গৌরী ঘোষ। শেষ কিছুদিন ছিলেন ভেন্টিলেশন সাপোর্টে। শিল্পীর মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাঁকে শেষ দেখা দেখতে হাসপাতালে জড়ো হচ্ছেন আপনজন ও শিল্প-সংস্কৃতি জগতের মানুষরা। 

গৌরী ঘোষের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শোকবার্তায় তিনি লেখেন, বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী গৌরী ঘোষের প্রয়াণে তিনি গভীর শোকাহত। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, প্রয়াত গৌরী ঘোষের  অনবদ্য আবৃত্তি মননশীল শ্রোতাদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।  দীর্ঘদিন আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের উপস্থাপিকা-ঘোষিকা হিসাবে কাজ করেছেন গৌরীদেবী। মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সদস্য গৌরী ঘোষকে রাজ্য সরকার ২০১৮ সালে ‘কাজী সব্যসাচী সম্মান’ প্রদান করে। তাঁর প্রয়াণকে সাংস্কৃতিক জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি গৌরী ঘোষের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন। 

তিনি পরবর্তী প্রজন্মের আবৃত্তিকারদের কাছে ছিলেন অগ্রজপ্রতিম। তাঁর উচ্চারণ দক্ষতা, অভিব্যক্তিতে মুগ্ধ সকলেই। বাচিক শিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, গৌরী ঘোষ ছিলেন তাঁর মায়ের মতো। 'মনে হচ্ছে দ্বিতীয়বার মাতৃহারা হলাম। পরিবারে মা চলে গেলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়, এখনও তেমনটাই মনে হচ্ছে।' বললেন তিনি। জানালেন, যতদিন সুস্থ ছিলেন গৌরিদেবী তাঁকে বারবার ফোন করে জানতে চাইতেন করোনাকালে সাবধানে থাকছেন কিনা। আগামীদিনে বাচিকশিল্পী পার্থ ঘোষ ও গৌরি ঘোষকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রের কাজ করতে চেয়েছিলেন। তা আর হল না। 

সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্রও এককথায় ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, গৌরীদেবী সবসময় জোর দিতেন স্পষ্ট উচ্চারনে। জয় গোস্বামীর মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয় অবলম্বনে 'বেণীমাধব' গানটি গাইবার সময় অনুসরণ করেছিলেন তাঁর উচ্চারণ, অভিব্যক্তিকে। 


গতকালই প্রয়াত হয়েছেন সঙ্গীত জগতের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব তবলা শিল্পী পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। আজ তাঁর শেষকৃত্য। তাঁর আগেই   শিল্পীমহলে আবারও একটা খারাপ খবর।  

আবৃত্তি জগতের অমর যুগল গৌরী ঘোষ এবং পার্থ ঘোষ। আকাশাবাণীর উপস্থাপক হিসাবে শুরু হয়েছিল চলা। বহু বছর আকাশবানীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা।কয়েক দশক ধরে আকাশবানীর বহু অনুষ্ঠানে এই জুটির আবৃত্তি ছিল জনপ্রিয়। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাঁরা ছিলেন আইকন ও আইডল।  তাঁদের যুগলবন্দিতে শ্রুতি নাটক ‘কর্ণকুন্তি সংবাদ’ জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছায়। 

কীভাবে, কখন হবে শিল্পীর শেষকৃত্য , তা জানার অপেক্ষায় প্রিয়জনেরা।